প্রথমবারের মত যশোর বেনাপোল পৌর এলাকায় "স্মার্ট আইডি কার্ড" বিতরণ

 প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৬ অপরাহ্ন   |   সারাদেশ



মনা,যশোর শার্শা প্রতিনিধিঃ

এই প্রথমবারের মত বেনাপোল পৌর এলাকায় স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করলো বেনাপোল পৌর কর্তৃপক্ষ। ৯টি ওয়ার্ডে সর্বমোট ২৩৯৫১ জন পৌর নাগরিকদেরকে এই স্মার্ট কার্ড বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেনাপোল পৌরসভা।


মঙ্গলবার(৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা প্রশাসন,শার্শা ও বেনাপোল পৌরসভা কর্তৃক আয়োজিত পৌরসভা প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রথম ৩ জন পৌর নাগরিককে "স্মার্ট আইডি কার্ড" প্রদানের মধ্য দিয়ে স্মার্ট কার্ড বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধণ ঘোষনা করা হয়। উদ্বোধণ করেন বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক ও শার্শা উপজেলার নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান।


অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-সহকারী কমিশনার(ভূমি),শার্শা ও বেনাপোল পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা-নুসরাত ইয়াসমিন।


অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন-শার্শা উপজেলার নির্বাচন অফিসার কামাল উদ্দিন আহম্মেদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন-বেনাপোল পৌরসভার সচিব-মো.সাইফুল ইসলাম বিশ্বাস,প্রশাসনিক কর্মকর্তা-বি এম রনি,স্বাস্থ্য কর্মকর্তা-মো.হাফিজুর রহমান সহ পৌরসভার বিভিন্ন শাখা কর্মকর্তাবৃন্দ। 


পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি শুরু করা হয়। এরপর "স্মার্ট আইডি কার্ড" বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে স্বাগতিক বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি-কামাল উদ্দিন আহম্মেদ।


স্মার্ট আইডি কার্ড প্রদান কর্মসূচি'র প্রথম তিন সৌভাগ্যবান ব্যাক্তিরা হলেন-১। জুলাই-আগষ্ট/২০২৪ গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ আব্দুল্লাহ'র পিতা-মো.আব্দুল জব্বার ২। বেনাপোল জামে মসজিদের পেশ ইমাম-মো.হারুনুর রশিদ ৩। জৈনকা গৃহিনী।


বেনাপোল পৌরসভা কার্যালয়ে অস্থায়ী নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্যসেবা কাউন্টার থেকে জানা গেছে,আজ বিকাল ৪টা পর্যন্ত বেনাপোল পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড(সাদীপুর গ্রাম)'র মোট-২৭১২ জনকে স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ করা হবে। তথ্যসেবা কাউন্টারের স্মার্ট কার্ড বিতরণ সহযোগী সোহেল রানা জানিয়েছেন-আগামীকাল ৪ ডিসেম্বর ২নং ওয়ার্ড(নামাজগ্রাম-১৬৩৫ ও দূর্গাপুর-১৩৩০ জন),৫ ডিসেম্বর ৩নং ওয়ার্ড(বেনাপোল-৩৪২৫ জন), ৬ ডিসেম্বর ৪নং ওয়ার্ড(কাগজপুকুর-১৮৬২ এবং কাগমারী-৬৭৬ জন) এবং একই তারিখ ৫নং ওয়ার্ড(দিঘিরপাড়-১৮১০ জন),৭ডিসেম্বর ৬নং ওয়ার্ড(ভবেরবেড়-৩৯৩০ জন),৮ডিসেম্বর ৭নং ওয়ার্ড(গাজীপুর-২১৪৮ জন) এবং একই তারিখ ৮নং ওয়ার্ড(ছোটআঁচড়া-২১৫৯ জন) সর্বশেষ ৯ ডিসেম্বর ৯নং ওয়ার্ড(বড়আঁচড়া উত্তরপাড়া-২২৬৪ জন) স্মার্ট আইডি কার্ড প্রদান করা হবে।


স্মার্ট আইডি কার্ডে যা কিছু রয়েছে-

এবারের স্মার্ট কার্ডে ব্যক্তির নাম (বাংলা ও ইংরেজি), পিতা/মাতার নাম, জন্মতারিখ ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন নম্বর দৃশ্যমান থাকবে। কার্ডের পেছনে থাকবে ব্যক্তির ভোটার এলাকার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও জন্মস্থান। তবে সব মিলিয়ে স্মার্ট কার্ডের মধ্যে থাকা চিপ বা তথ্যভান্ডারে ৩২ ধরনের তথ্য থাকবে, যা মেশিনে পাঠযোগ্য হবে।


এবারের স্মার্ট কার্ডের সঙ্গে কাগজের তৈরি ল্যামিনেট করা বিদ্যমান কার্ডের বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। প্লাস্টিকের (পলিমার দিয়ে) তৈরি কার্ডটি মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে। স্মার্ট কার্ডের পেছনে কোন মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ দেওয়া থাকে না তাই ধরা যায় এটি একটি আজীবনের জাতীয় পরিচয় পত্র।


নারীদের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কার্ডে স্বামীর নাম দৃশ্যমান ছিল। পিতার নাম ছিল না। অপরদিকে পুরুষের কার্ডে স্ত্রীর নাম উল্লেখ ছিল না। একে বৈষম্যমূলক বলে বলা হচ্ছিল। এবার নারীদের স্মার্ট কার্ডে স্বামীর নাম দৃশ্যমান থাকবে না। সেখানে পিতার নাম থাকবে।


কার্ডের তথ্যভান্ডারে ব্যক্তির পেশা, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, বয়স, বৈবাহিক অবস্থা, জন্মনিবন্ধন নম্বর, লিঙ্গ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, দৃশ্যমান শনাক্তকরণ চিহ্ন, ধর্ম, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, আয়কর সনদ নম্বর, টেলিফোন ও মোবাইল নম্বর, মা-বাবা ও স্বামী বা স্ত্রীর পরিচয়পত্র নম্বর, মা-বাবা বা স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুসংক্রান্ত তথ্য, অসমর্থ বা প্রতিবন্ধীর তথ্য ইত্যাদি স্থান পেয়েছে। এ ছাড়া স্মার্ট কার্ডের ডিজাইনে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা, জাতীয় পাখি দোয়েল, জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও চা-পাতা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ও বর্তমান জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।


উল্লেখ্য,স্মার্ট কার্ড বিতরণের সময় কার্ডধারীদের ১০ আঙুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশ সহ বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করবে নির্বাচন কমিশন।

সারাদেশ এর আরও খবর: