ঘুষের টাকাসহ বেনাপোল কাষ্টমস্ সুপার শামিমা আক্তার ও এনজিও কর্মী হাসিবুর দুদকের হাতে আটক।

 প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৫ অপরাহ্ন   |   অপরাধ




মোশারেফ হোসেন যশোর প্রতিনিধিঃ

অবশেষে বেনাপোলে কাস্টমস হাউসের নাটকীয় ঘুষ কেলেংকারীর মহানায়িকা কাস্টমস সুপার শামীমা আক্তারকে রক্ষা করতে পারেনি বেনাপোল কাস্টমস হাউস। তীব্র সাংবাদিকদের আন্দোলনের মুখে ওই কর্মকর্তাকে দুদক মামলা দিতে বাধ্য হয়েছে। যশোর দুদকের সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন যশোর জেলা দায়রা জজ আদালতে বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলা দুদকের তদন্ত নং -৯ তারিখ স্মারক নং ২৪২২ মামলা নং ১১/২০২৫ তারিখ ৭/১০/২০২৫।


এই মামলার এজাহারে উল্লেখ অনুযায়ী আসামিরা হলেন ১। বেনাপোল কাস্টমস হাউজের সুপার শামিমা খাতুন, পিতা শহিদুল ইসলাম, গ্রাম: ৩০২ নাজির শংকরপুর যশোর ২। বেনাপোল পোর্ট থানার নাজমুল হোসেন এর ছেলে হাসিবুর রহমান (২৭)। ১ নং আসামি ও ২ নং আসামি ঘুষ লেন দেন এর কাজে সহায়তা থাকায় বাংলাদেশ দন্ডবিধির ১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪ও ১৬৫ (ক) ১০৯ নং ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় শাস্তি যোগ্য অপরাধ করেছে।


মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, বাদি কাস্টমস এর উপ-সহকারী পরিচালক মো: আনোয়ার হোসেন বেনাপোল কাস্টমস হাউজের ঘুষ সম্পর্কিত বিষয়ে ওৎ পেতে থাকে। এবং তার কাছে আগে থেকে গোপন সুত্রে খবর পাওয়া ঘুষ লেন দেন এর বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত থাকায় কাস্টমস এর সামনে থেকে বেনাপোল পোর্ট থানার বেনাপোল গ্রামের হাসিবকে কাস্টমস হাউজের সামনে থেকে আটক করে । ওই এজাহারে উল্লেখ আছে কাসটমস এর সুপার দীর্ঘদিন যাবৎ এনজিও কর্মীকে দিয়ে ঘুষ লেন দেন এর কাজ করে।


তিনি বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ৬ নং গ্রুপে কাজ করেন। ওই গ্রুপে মোটর পার্টস ও মোটর গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানি হয় ভারত থেকে। যার এস এস কোড বদল করে ঘুষ লেনদেন এর কাজ হয়। সুপার দীর্ঘদিন ধরে হাসিবকে দিয়ে দুর্নীতিবাজ সিএন্ড এফ এর নিকট থেকে ঘুসের টাকা আনে এবং সময় সুযোগ মত সে সুপারকে কখনো নগদ কখনো বিকাশে দিয়ে দেয়। অভিযোগ এর কপি অনুযায়ী দেখা গেছে মোবাইল মেসেজ এর মাধ্যেমে গত ১০/০৮২৫ ইং তারিখ সুপা কে ০১৭১১৩৭৫৩৭৯ নাম্বারে ৭ হাজার টাকা পঠিয়েছে।


এরপর গত ২২ আগষ্ট ০১৭৩৫-৩৯৮০৮০ নাম্বারে বিকাশ করতে বলেন,১১ সেপ্টেম্বর রাত্রে ০১৯১৪-৮৪৮১২ নাম্বারে ম্যাসসেজ করে জানতে চায় টাকা ওই নাম্বারে যাবে কি না এরপর হাসিবুর জানায় ম্যাডাম টাকা পাঠানো হয়েছে লাষ্ট নাম্বার ১৪১৪। এছাড়া হাসিবকে দিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে শুল্ক ফাকির কাজে সহায়তা করে আনা টাকা প্রথমে কাস্টমস এর সামনে বিকাশ এর দোকানে রাখে এরপর সেখান থেকে টাকা নিয়ে সুযোগ বুঝে হাসিব এর নিকট থেকে নিয়ে নেয়। হাসিবকে দিয়ে ওই দিন জনৈক সিএন্ডএফ এর নিকট থেকে ঘুষের ২লাখ ৭৬ হাজার টাকা আনে। এরপর কাস্টমস গেটে হাতে নাতে হাসিবকে আটক করে শামিমার নিকট ফোন দিলে শামিমা জানায় টাকা তোমার নিকট রাখ আমি পরে নিব। সুত্র ধরে হাউসে গিয়ে দুদক কর্মকর্তারা টাকার বিষয় জানতে চাইলে শামিমা বাধ্য হয়ে শিকার করে। হাসিব কাসটমস হাউসে বিগত ২০২০ সাল থেকে এনজিও কর্মী হিসাবে কাজ করে আসছে।


উল্লেখ্য গত ৬/১০/২০২৫ তারিখে টাকা সহ এনজিও কর্মী হাসিব ও কাস্টমস সুপারকে আটক করা হলেও রাত্রে পুলিশের কাছে নাটকীয় কায়দায় সপর্দ করে হাসিবকে । পরে সাংবাদিকদের চাপে ৭ /১০/২৫ ইং তারিখে শামিমাকে আটক দেখিয়ে মামলা দায়ের করে যশোর আদালতে।

অপরাধ এর আরও খবর: