কালকিনিতে জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান দখলের পায়তারা
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ শেখ লিয়াকত আহম্মেদ।
মাদারীপুরের কালকিনিতে বাংলাদেশী বংশোদভূত নেদারল্যান্ডের নাগরিকের প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানে ককটেল হামলা ও ভয়ভিতি দেখিয়ে সম্পত্তি দখলের পায়তারা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ১৬ আগস্ট ২০২২ইং পৌর এলাকার লক্ষীপুর পখিরা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। গত রবিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভূক্তভোগী পরিবার।
ভূক্তভোগী নেদারল্যান্ড প্রবাসী Drs. বদরুজা নাসরিন বেবী সাংবাদিকদের বলেন, আমি দীর্ঘ ৪০বছর দেশের বাহিরে থাকি। ১৯৯৫ সালে আমার বাবার সম্পত্তি রেকর্ড করার জন্য দেশে আসলে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসাসীরা আমাকে মেরে ফেলার উদ্যেশে ভয়াবহ আক্রমন চালায়। তারা বোমা হামলা ও গুলি করে আমাকে চিরদিনের জন্য শেষ করে দিতে চেয়েছিল। সেদিন পুলিশ বাহিনির বিশেষ ভূমিকা রাখায় আমি সেদিন প্রাণে বেঁচে যাই। আমাকে মেরে ফেলার চেস্টা আজ পর্যন্ত অব্যহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, আমি এলাকার গরীব ও অসহায় মানুষের কল্যানে কাজ করার জন্য বদিউজ্জামান ফাউন্ডেশনের মসজিদ, দাতব্য চিকিৎসালয়, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও পাঠাগারসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নির্মান করি। এগুলো আমার নিজের অর্থায়নে আজও পরিচালিত হচ্ছে। আমরা উল্লেখযোগ্য কাজ হলো কালিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ ।
কিন্তু এলাকার বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের ভয়াবহ হুমকীর কারণে, প্রায় ৭ বছর পর্যন্ত আমি দেশে আসতে বিরত থাকি।
গত ২১ জুলাই ২০২২ইং আমার একমাত্র ভাইয়ের মৃত্যুর কারণে, তার বিদেহী আত্মার চেহলাম উপলক্ষ্যে, আমি গত শনিবার ১৩ আগস্ট ২০২২ইং তারিখে আমার নিজ গ্রামের নিজস্ব বাড়িতে আসি।
এলাকায় প্রভাবশালী ভূমিদস্যদের একটা শক্তিশালী সিন্ডিকেট অতীতে আমাদের পৈত্রিক ও আমার নিজস্ব ক্রয়ক্রিত জমি জোর পূর্বক দখল করে নিয়েছে। আমার ভাইয়ের মৃত্যর পর, তারা আমাদের বিশাল সম্পত্তি দখল করার পায়তারা করতেছে। এবং ধীরে ধীরে দখল করে নিচ্ছে। এই সব সিন্ডিকেট সদস্যদের নাম উচ্চারণ করলে, যে কোনা সময়ে, আমরা জানে মালে ধ্বংস হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, ১৬ আগস্ট ২০২২ সকালে আমার আশেপাশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় বলে বুঝতে পারি । এবং ঐ দিন রাত আনুমানিক ১২:৩০টার দিকে আমাকে সপরিবারে খুন করার উদ্দেশ্যে ৬ থেকে ৭ জন দুস্কৃতিকারী, আমার বাড়ির উচুঁ দেওয়াল টপকে, ভেতরে এসে, আমার শয়ন ঘরের পেছনে পরপর কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটায়। এবং বাড়ির বাহিরের দেওয়ালেও কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটায়। মুহূর্তের মধ্যে পুরা এলাকা ধোয়ায় ছেয়ে যায়। বারুদের গন্ধে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। আমার বাড়ির লোকজনের ডাক চিৎকার দিয়ে বের হলে, অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা চারিদিকে ছুটে দেওয়াল টপকে বের হয়ে যায়।
আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে আমরা প্রথমে থানায় ফোন করি এবং আমি নিজে ৯৯৯ ফোন করে কালকিনি থানার পুলিশ বাহিনীর সহায়তা কামনা করি ।
অবশেষে রাত আনুমানিক ০১.৪৮ টায় থানা থেকে পুলিশ সদস্যদের একটি টিম এসে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও বিভিন্ন ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ও অবিস্ফোরিত কয়েকটি চকলেট বোমা বা পটকা (পুলিশ টিমের ভাষ্য মতে) উদ্ধার করেন ও আলামতগুলো একটি সাদা পলিথিন ব্যাগে বালুর মধ্যে ভরে, তাদের সঙ্গে করে থানায় নিয়ে যান।
বদরুজা নাসরিন আরও জানান, রাতের অন্ধকারে, আমরা সন্ত্রাসীদের মুখ দেখতে পাই নাই। তবে অনুমান করি যে, যে সকল সন্ত্রাসীরা দিনের বেলায় দেওয়াল টপকে বাড়ির ভেতরে এসে ক্ষতি সাধন করে, এই সব দুস্কৃতিকারীরাও ঐ দলেরই সদস্য। আমি জিবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরির আবেদন করি। এরপরেও সন্ত্রাসীরা আমাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতেছে ।
এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ওসি মোঃ শামীম হোসেন বলেন, নেদারল্যান্ড প্রবাসী ডক্টরস বদরুজা নাসরিন বেবীর প্রতিষ্ঠিত বদিউজ্জামান ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন প্রজাতীর গাছের চারা কেটে ফেলার ঘটনায় স্থানীয় আক্তার সরদার, কহিনুর বেগম, ইয়ামিন সরদার ও লতিফ সরদারের নামে থানায় সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।