বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা খাতে নতুন দিগন্তের উন্মোচিত

 প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন   |   জেলার খবর


জাহিদ হাসান(নাটোর) প্রতিনিধি,

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সেবা খাতে নতুন দিগন্তের উন্মোচিত হয়েছে প্রতিষ্ঠার ৪৪ বছর পরে সেবা খাতে নতুন দিগন্তের উন্মোচিত হলো। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ানের জন্য প্রথম রোগী হিসাবে ভর্তি হয়েছিলেন উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বৃষ্টি রোজারিও তাকে এনেস্থেসিয়া করেন জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা মেহতাজুল ইসলাম। তারপরে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ খুরশীদ আলমের নেতৃত্বে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ডলি রাণী, ডা. মোঃ মুক্তার হোসাইন শুরু করেন নতুন দিগন্তের অগ্রযাত্রার। এর সাথে সেবা খাতে চালু হয়েছে বড়াইগ্রাম উপজেলার সাধারণ মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার ফসল আধুনিক অল্ট্রাসনোগ্রাম আর  এক্স-রে মেশিনের কার্যক্রম। আধুনিক সেবা গুলো এখন মিলবে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে বড়াইগ্রাম হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। ২০২০ সালে হাসপাতালটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত হয়। নতুন ভবনে সুপরিসর আধুনিক অপারেশন কক্ষ হলেও ছিলনা প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। আবার ২০০৪ সালে একটি এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ হলেও এতোদিন সেটা ছিল বাক্স বন্দি। একটি আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও সেটার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি দক্ষ চিকিৎসকের অভাব। এবার সেই সকল কার্যক্রম একসাথে চালু হলো। হাসপাতালের আরএমও ডা. ডলি রাণী বলেন, প্রথম দিনে দু’টি সিজারিয়ান সেকশন অস্ত্রপচার হয়েছে। প্রথমটি উপজেলার ভবানিপুর গ্রামের বৃষ্টি রোজারিও (২২)- প্লাবন রোজারিও (২৬) দম্পতির জমজ পুত্র সন্তান হয়। এটি তাদের প্রথম সন্তান। দ্বিতীয়টি জোনাইল গ্রামের প্রিয়াংকা (২৬)- নিখিল  (৩০) দম্পতির পুত্র সন্তান। এটি তাদের দ্বিতীয় সন্তান। উভয় মা ও সন্তানরা ভালো এবং সুস্থ্য আছে। কথা হয় প্রথম দম্পতির স্বামী প্লাবন রোজারিওর সাথে, তিনি বলেন সরকারি হাসপাতালে এভাবে অস্ত্রপ্রচার এবং সেবা পাবো তা কল্পনাই করতে পারতেছি না সত্যি আমি ভাগ্যবান তাই কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ।এই সব নতুন দিগন্তের অগ্রযাত্রার নেপথ্যের কারিগর হলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খুরশীদ আলম। মাত্র চার মাস আগে তিনি এই হাসপাতালে যোগদান করেছেন। তিনি এসে শুণ্য অপারেশন কক্ষ, বাক্সবন্দি এক্স-রে আর নষ্ট অল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন পান। এরপর তার ডাকা স্বাস্থ্যসেবার প্রথম সভায় তিনি তার ইচ্ছা আর পরিকল্পনার কথা জানালে কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস তাকে সব ধরণের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজ শুরুর পরামর্শ দেন। তার পরামর্শে কে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরলস পরিশ্রম করে কার্যকর করে দীর্ঘ ৪৪ বছর পর সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে নতুন দিগন্তের দোয়ার খুলে দিলেন তিনি। এ বিষয়ে ডা: খোরশেদ আলম বলেন এখন থেকে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু হয়েছে সুপরিসর আধুনিক অপারেশন থিয়েটার। পর্যাক্রমে সব ধরনের অপারেশনের সুবিধা ভোগ করবে বড়াইগ্রামবাসী। আজ প্রথম সিজারিয়ান সেকশন অপারেশনের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ জমজ সন্তান ও জন্মদাত্রী মা তিনজনই সুস্থ আছে। অপারেশনের কারিগর হিসেবে ছিলেন জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেস্থিসিয়া) ডা. মো মেহেতাজুল ইসলাম, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ডলি রাণী, ডা. মোঃ মুক্তার হোসাইন এমওডিসি, এসএসএন হালিমা বেগম ও বিরতি রাণী। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা মাননীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অধ্যাপক মো. আব্দুল কুদ্দুস মহোদয়কে। সার্বিক দিক-নির্দেশনায় নেপথ্যে ছিলেন সুযোগ্য সিভিল সার্জন ডা. রোজী আরা খাতুন। এনেস্থিসিয়া জিএ মেশিন দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তত্বাবধায়ক ডা. পরিতোষ কুমার রায় স্যার, আধুনিক সদর হাসপাতাল, নাটোর। একটা ওটি টেবিল ও পোর্টেবল ওটি লাইট দিয়ে আমাদের কৃতজ্ঞ করেছেন ইউএইচএফপিও গুরুদাশপুর ডা. মুজাহিদুল ইসলাম খোকন। জরুরী ভিত্তিতে ওটি সিলিং লাইট, ডায়াথার্মি মেশিন ও ওটি ড্রাম সরবরাহ করে সহায়তা করেছেন ইউএইচসি ডিপিএম ডা. জহির আহমেদ তালুকদার। অশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি আমার কর্মীবাহিনীকে যাদের তিলতিল পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে আমাদের ওটি কমপ্লেক্স। সন্তোষ, সাজন, বিউটি, নীলা, মায়া, হান্নান, মানিক, মৌসুমী, সালমা, জাহাঙ্গীর, মিথুন, বরুন, আসাদুল, ডাবলু, শহীদ, ভুট্টো, হিরাসহ আরও অনেকেই। ধন্যবাদ জানাই বড়াইগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দকে যাদের সহযোগিতা ছিল অনস্বীকার্য ও অপরিসীম। সার্বক্ষণিক ছায়ার মতো থেকে সহযোগিতা করেছেন প্রধান সহকারী মো. ছালেহ মুছা। ধন্যবাদ টিম বড়াইগ্রাম। আমি নিশ্চিত, টিম বড়াইগ্রাম এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবায় যে নতুন দিগন্তের সূর্য উদয় হয়েছে সেটি  ধারাবাহিক ভাবে ধরে রাখবেন।

জেলার খবর এর আরও খবর: