ঢাকায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত আবদুল্লাহ বেনাপোল বড় আচঁড়ায় নানা-নানীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত
মনা,যশোর শার্শা উপজেলা প্রতিনিধিঃ
জুলাই-আগষ্ট/২০২৪ গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ নভেম্বর/২০২৪ ইং তারিখ ঢাকার সিএমএইচ-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ঢাকা সরোওয়ার্দি কলেজের পলিটিক্যাল সায়েন্স, অনার্স শেষ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী বেনাপোলের কৃতি সন্তান শহীদ আব্দুল্লাহ(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল মধ্যরাতে শহীদ আব্দুল্লাহ'র মরদেহ তার জন্মস্থান যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বেনাপোলে নিয়ে আসা হয়। আজ ১৫ নভেম্বর শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বেনাপোলের ঐতিহ্যবাহী বলফিল্ড ময়দানে মরহুমের ৪র্থবার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে রাজধানী ঢাকায় প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয় সিএমএইচ-এ,দ্বিতীয়-ঢাকা সরোওয়ার্দি কলেজে এবং তৃতীয়বার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়-জাতীয় শহীদ মিনার স্মৃতিসৌধে।
অন্তর্বর্তী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আব্দুল্লাহ'কে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে লিখিত ভাবে শহীদ ঘোষণা করায় বেনাপোলের জানাযায় শার্শা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে "গার্ড অব অনার" প্রদান করা হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার আচ্ছাদনে ঢাকা শহীদ আব্দুল্লাহ'র প্রতি "গার্ড অব অনার" প্রদান করেন শার্শা উপজেলার নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে ভিওকল বাজিয়ে মৃতদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও দাড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালণ করা হয়।
শত-সহস্র মানুষের উপস্থিতির ঐ জানাযায় ইমামতি করেন-মুফতি সাইদুল বাশার(মুহতামিম,
বেনাপোল জামিয়া ইসলামিয়া ও লতিফা ইয়াছিন এতিমখানা)।
জানাযা শেষে শহীদ আব্দুল্লাহ'র মরদেহ দাফন করা হয় তার জন্মস্থান বেনাপোল পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বড়আঁচড়া গ্রামে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে।
গুলিবিদ্ধ মেধাবী শিক্ষার্থী শহীদ আবদুল্লাহ'র আহতের ঘটনায় জানা যায়-শহীদ আব্দুল্লাহ,ঢাকা সরোওয়ার্দি কলেজের পলিটিক্যাল সায়েন্স, অনার্স শেষ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী বেনাপোলের কৃতি সন্তান। বেনাপোল পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বড়আঁচড়া গ্রামে তার বাড়ী। পিতার নাম-মো.আব্দুল জব্বার,মাতা-মারিয়া খাতুন। দুই ভাই,এক বোনের মধ্যে সে সকলের ছোটজন ছিলেন।
শহীদ আব্দুল্লাহ'র পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়,শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগে গত ৬ই আগস্ট রাজধানী ঢাকায় ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে আব্দুল্লাহ অংশ নেয়। মিছিলটিকে ছত্রভংগ করার জন্য পুলিশ অতর্কিতে মিছিলের উপর গুলি ছোঁড়ে,এতে আব্দুল্লাহ'র মাথার উপরের অংশে গুলি লাগে,গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুল্লাহ রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে,তার সহকর্মীরা তাকে দ্রুত সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালে নিয়ে যায়,সেখানে আইসিইউতে তার চিকিৎসা চলতে থাকে। ৮ আগষ্ট/২০২৪ ইং তারিখ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.ইউনুস সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালে আহতের দেখতে গেলে,সেখানে তিনি আব্দুল্লাহ'র চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। এসময় সেখানে সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান,নৌ-প্রধান সহ অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চিকিৎসায় অবস্থার উন্নতি ঘটলে চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা আব্দুল্লাহ কে তার নিজ গ্রামের বাড়ী বেনাপোলের বড়আঁচড়া গ্রামে নিয়ে আসে। কিন্তু ১১আগষ্ট/২০২৪ আব্দুল্লাহ'র অবস্থার অবনতি দেখে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়,কিন্তু সেখানে আব্দুল্লাহ'র অবস্থা ক্রমেই অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানী ঢাকার সিএমএইচ এ ভর্তি করা হয়। প্রায় তিন মাস চিকিৎসা শেষে ১৪ নভেম্বর/২০২৪ ইং তারিখ সে মৃত্যু'র কোলে ঢলে পড়ে।