শাহাপুর হাসপাতাল রোড ও মন্দিরের সামনে ময়লার স্তূপে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ

বদরগঞ্জ প্রতিনিধিহা, বিবুর বকশী
বদরগঞ্জ পৌরসভার শাহাপুর হাসপাতাল এবং মন্দিরের সামনে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা আবর্জনা জমে থাকায় এলাকার সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে হাসপাতালের সামনে ময়লা জমে থাকা রোগীদের চলাচলে সমস্যা তৈরি করছে এবং দুর্গন্ধের কারণে মানুষ শ্বাসকষ্টে ভুগছে। এ পরিস্থিতি শহরের জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হাসপাতাল এলাকায় ময়লা ও আবর্জনার স্তূপ পড়ে থাকার কারণে রোগী ও তাদের অভিভাবকরা খুবই অস্বস্তিতে আছেন। তাদের অভিযোগ, একদিকে যেখানে হাসপাতালের দরকার সবার আগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সেখানে সেখানে ময়লা জমে থাকা জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। বিশেষত হাসপাতাল এলাকা দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ চলাচল করেন, কিন্তু সঠিকভাবে ময়লা পরিষ্কার না হওয়ার কারণে, ওই এলাকায় জীবাণু, মশা, মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা শ্বাসকষ্ট, ত্বকের সমস্যা এবং বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ছড়ানোর সুযোগ তৈরি করছে।
এছাড়া, মন্দিরের আশপাশের এলাকায়ও একই অবস্থা। মন্দিরে পুজা দেওয়ার জন্য আসা ভক্তরা দুর্গন্ধের কারণে সেখানে প্রবেশে ইচ্ছুক হচ্ছেন না। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মন্দিরের সামনে ময়লা জমে থাকায় তাদের ধর্মীয় কার্যক্রমে উপস্থিতি কমছে এবং ধর্মীয় চেতনা ও পরিবেশের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ পাচ্ছে। মন্দিরের পুরোহিত, স্বামী নন্দন দাস জানান, এই ময়লা-আবর্জনার কারণে ভক্তদের উপস্থিতি কমে গেছে এবং দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে, যা মন্দিরের পূজা কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে।
এছাড়া, শহরের অন্যান্য অংশে, বিশেষত যেখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক মতো কাজ করছে না, সেখানে পানির স্তূপ জমে থাকে। জলাবদ্ধতার কারণে মশার উপদ্রব বেড়েছে এবং এটি ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু ও অন্যান্য ভাইরাল রোগের জন্য এক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক এলাকাবাসী এবং ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন যে, পৌরসভা থেকে যদি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, তাহলে এই পরিস্থিতি জনস্বাস্থ্যের জন্য আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন,“হাসপাতালের সামনে ময়লা জমে থাকা কারণে রোগীদের এখানে আসতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। দুর্গন্ধের কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে। পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ—এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হোক।”
মন্দিরের পুরোহিত স্বামী নন্দন দাস বলেন,
“মন্দিরের আশপাশে ময়লা জমে থাকার কারণে ধর্মীয় কার্যক্রমে উপস্থিতি কমছে। ভক্তরা দূর্গন্ধের কারণে মন্দিরে আসতে চাচ্ছে না। পৌরসভা যদি দ্রুত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু না করে, তাহলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে সমস্যা হবে।”
এছাড়া, রাস্তার অপর পাশে নর্দমার পানি জমে থাকায় মশার উপদ্রবও বেড়েছে, যা ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়াচ্ছে। অনেক স্থানীয় নাগরিক ময়লার স্তূপের কারণে শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ, এবং ডায়রিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ পৌরসভার জেলা প্রসাশক, মো. মিজানুর রহমান বলেন,
“আমরা সচেতন যে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ময়লা জমে জনস্বাস্থ্যের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা জানি হাসপাতাল, মন্দির এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ময়লা জমে যাওয়া মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে আমরা ইতোমধ্যে ময়লা পরিষ্কারের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছি এবং শীঘ্রই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপযুক্ত নির্দেশনা দিয়ে আমরা এ সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে চেষ্টা করছি। সেই সাথে, আমরা জনসাধারণের কাছে অনুরোধ করছি যে, ময়লা ফেলার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করবেন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে আমাদের সহযোগিতা করবেন।”
স্থানীয়দের দাবী:
হাসপাতাল এবং মন্দিরের আশপাশের ময়লা দ্রুত অপসারণ
নিয়মিত ময়লা পরিষ্কার করতে পৌর কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম জোরদার করা
ড্রেনের পানি জমে থাকা প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ
স্থানীয় জনগণের মধ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি