ভূঞাপুরে জরাজীর্ণ বৈদ্যুতিক লাইন মৃত্যুর ঝুকিতে জনজীবন

 প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৪১ অপরাহ্ন   |   সারাদেশ


মুহাইমিনুল (হৃদয়) :

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা হিসেবে ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কারণে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জরাজীর্ণ রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইন। বৈদ্যুতিক লাইন যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটির পরিবর্তে মরা গাছ ও পঁচা বাঁশের খুঁটিতে জরাজীর্ণভাবে বিভিন্ন গ্রামে দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এর ফলে বিভিন্ন সময়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। বৈদ্যুতিক লাইনের এই দূরাবস্থা ছাড়াও রয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। দিন দিন ভোগান্তি বেড়েই চলছে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের। বিভিন্ন জায়গায় ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা, তারপরও টনক নড়ছে না কর্তৃপক্ষের। দেখেও যেন না দেখার ভান করে চলছে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এরকম চিত্র দেখা গেছে।


বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, ভূঞাপুরে শতভাগ বিদ্যুতায়নের জন্য ৮২৬ কিলোমিটার নতুন লাইন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ১’শ ২৩ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। এছাড়াও প্রতিবছর লাইন সংস্কার, খুঁটি, তার, ট্রান্সফরমারসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক মালামাল ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ আসে হাজার হাজার টাকা। তারপরও শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষণার সাড়ে চার বছর অতিক্রম হলেও এর সুবিধা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। খুঁটি বাণিজ্য, লাইন বাণিজ্য, ট্রান্সফরমার বাণিজ্য যেন নিত্য নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের। টাকা ছাড়া যেন কোন কিছুই হয় না এ অফিসে। অথচ বিনামূল্যে এসব সুবিধা পাওয়ার কথা গ্রাহকদের। প্রি-পেইড মিটারধারীদের সার্ভিস তার দেয়ার কথা থাকলেও সেখানে রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি। এছাড়াও ভুতুড়ে বিল আর লোডশেডিংয়ের বাড়তি বোঝাতো রয়েছে।


এদিকে, মহামারী করোনাকালীণ সময়ে লকডাউন, ব্যাংক বন্ধ ও আর্থিক সংকটের কারণে গ্রাহকরা নিয়মিত মাসিক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেনি। তাদের বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার কারণে লাইন কেটে দিচ্ছে ও বাসা-বাড়িতে গিয়ে বিল পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে।


গোবিন্দাসী গ্রামের আবুল কালাম জানান, গোবিন্দাসী স্কুল রোডে লাইনটি জরাজীর্ণ। মাথা ছুঁই ছুঁই। মরা বাঁশ দিয়ে লাইন টিকিয়ে রাখা হয়েছে। দড়ি আর ছেঁড়া কাপড় দিয়ে তার বেঁধে রাখা হয়েছে। যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। একাধিকবার বিদ্যুৎ অফিসে জানানো হলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না তারা।


চেংটাপাড়া গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন, তার বাড়ির সামনে দিয়ে জরাজীর্ণ একটি বিদ্যুতের লাইন গেছে। এ লাইনে দুটি গরু ও পুকুরের ১৫ হাজার টাকার মাছ মারা যায়। লাইনটি সংস্কারের জন্য ৭ মাস আগে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত লাইনটি সেই অবস্থাতেই রয়ে গেছে। শুধু কালাম ও আলাউদ্দিন নয়, এরকম অনেক অভিযোগ শত শত গ্রাহকের।


এ বিষয়ে ভূঞাপুর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান ভূঁইয়ার অফিসিয়াল নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিরাজের সাথে ফোনে এসব বিয়ষ জানতে চাইলে তিনি বিদ্যুৎ অফিসের অভিযোগ নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলেন।

সারাদেশ এর আরও খবর: