সিরাজগঞ্জে জমি লিখে না দেয়ায় স্ত্রীর শরীরে ধারালো অস্ত্রে ক্ষত- বিক্ষত।

 প্রকাশ: ২৫ অগাস্ট ২০২০, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন   |   অপরাধ ও আইন


সিরাজগন্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

  সিরাজগঞ্জের তাড়াশে স্ত্রীর পৈত্তিক সম্পত্তি স্বামীর নামে লিখে দিতে অস্বীকার করায় নাসিমা খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধুকে দুটি দাঁত ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সারা শরীর ক্ষত-বিক্ষত করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার পাষন্ড স্বামীর বিরুদ্ধে। এছাড়া সিগারেটের আগুন দিয়ে স্ত্রীর শরীরে ছ্যাকা দিয়ে পালিয়ে যায় তার স্বামী।

পরে স্থানীয়রা নাসিমাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসার অবনতি হলে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে গৃহবধূ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

 জানা যায়, তাড়াশ সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে নাসিমা খাতুনের ১৪ বছর আগে বিয়ে হয় দক্ষিণ মথুরাপুর গ্রামের মমতাজ আলীর সাথে। নাসিমার বাবা-মা মারা যাওয়ার পর তিনি পৈত্রিক সূত্রে এক বিঘা জমির মালিক হন। কিন্তু নাসিমার স্বামী বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীর ওই এক বিঘা জমি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় শারিরীক ভাবে নির্যাতন করতে থাকেন স্বামী মমতাজ আলী। ফলে নিরুপায় হয়ে এক পর্যায়ে সে দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন নাসিমা।

আরও জানা যায়, রবিবার রাতে নাসিমার স্বামী বোয়ালিয়া গ্রামে নাসিমার বাবার বাড়িতে এসে জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে মমতাজ উদ্দিন ঘুষি মেরে নাসিমার দুটি দাঁত ভেঙ্গে দেন। চাকু দিয়ে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে। মুখে কাপড় গুজে দিয়ে সিগারেটের আগুনের ছ্যাকা দেন। এ সময় বাচ্চাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে মমতাজ উদ্দিন পালিয়ে যায়।

সোমবার (২৪ আগষ্ট) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাসিমা খাতুন জানান, তার স্বামী একজন মাদকাসক্ত। নেশার টাকার জন্যই তার উপর এ ধরনের নির্যাতন প্রায়ই চালিয়ে আসছেন। আর চিকিৎসা শেষে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা: ফয়সাল আহম্মেদ জানান, নাসিমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার শরীরে যে ধরণের আঘাত রয়েছে তার জন্য উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।

তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুল আলম জানান, ভিকটিমের আগে চিকিৎসা দরকার। বিধায়, তাকে চিকিৎসা নিতে বলেছি। মামলা করলে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।