কালকিনিতে মাদ্রাসার চার শিশু শিক্ষার্থীকে বেধরক পিটিয়েছে শিক্ষক
শেখ লিয়াকত আহমেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক
মাদ্রাসার ছাদে হনুমানের গায়ে ঢিল মারার অপরাধে মাঃ আবির হোসেন (৮), সাব্বির (৭), সাইম (৭) ও জোবায়ের (৮) নামের চার শিশু শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসার দরজা বন্ধ করে জোড়া বেত দিয়ে বেধরক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মোঃ তোফায়েল হোসেনের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ ও ওসি মো. নাজমুল হাসান ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেন।
গতকাল (২৩ অক্টোবর) বিকেলে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসেরহাট নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ তোফায়েল আহমেদ পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।
ভূক্তভোগী পরিবার ও এলাকা সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার খাসেরহাট নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় হঠাৎ করে একটি হনুমান হানা দেয়। এসময় ওই মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীরা হনুমানটিকে তাড়ানোর জন্য ঢিল নিক্ষেপ করেন। এতে বাঁধা প্রদান করেন শিক্ষক হাফেজ মোঃ তোফায়েল হোসেন। কিন্তু শিক্ষকের বাঁধা উপেক্ষা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক ওই চারজন শিশু শিক্ষার্থীকে জোড়া বেত দিয়ে পিটিয়ে তাদের শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুতর জখম করেন। পরে আহতদের উদ্ধার কওে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়।
শিশু শিক্ষার্থী মোঃ আবির হোসেন কান্না জরিত কণ্ঠে বলেন, আমিসহ আমাদের চারজনকে মাদ্রাসার দরজা বন্ধ করে হাতে, পিঠে, পায়ের নিচে ও শরীরের বিভিন্নস্থানে বেত দিয়ে পিটিয়েছে এবং লাথি মেরেছে আমাদের হাফেজ হুজুর।
আহত শিক্ষার্থীর পিতা নাসির খান বলেন, তোফায়েল হুজুরে পিটিয়ে আমার ছেলের আঙ্গুল ভেঙ্গে দিয়েছ। আমি তার বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির একজন সদস্য ক্ষোভের সাথে বলেন, শিক্ষকদের কাজ শিক্ষা দান করা। কিন্তু আমাদের মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে এমন ভাবে মারছে যা ঠিক করেনি।
কালকিনি থানার ওসি মো. নাজমুল হাসান বলেন, শিক্ষদের এমন কাজ মেনে নেয়া যায় না। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ বলেন, শিশু শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিয়েছি। তাদের চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করেছি। তিন সদস্যেও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।