গোপালগঞ্জ কাশিয়ানী মিতু দাস হত্যা কান্ড।

 প্রকাশ: ১৯ মে ২০২১, ০৭:১০ অপরাহ্ন   |   অর্থ ও বাণিজ্য


গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি, 

মিতুর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলায় শ্রীপুর। পিতার নামঃ মৃত. ননী গোপাল দাস, মাতাঃ শোভা রানী। সে বেজড়া-ভাটরা জসিমননেছা উচ্চ বিদ্যালয় ও মুকসুদপুর ডিগ্রি কলেজের সাবেক ছাত্রী।  মিতু ২০১৩ সালে পারিবারিকভাবে সনাতন রীতি অনুযায়ী  সমীর বিশ্বাসের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। সমীর বিশ্বাসের পিতার নাম চিত্ত রঞ্জন বিশ্বাস, মাতার নাম অনুমতি বিশ্বাস, গ্রাম দড়িউমাজুড়ি, উপজেলাঃ চিতলমারী, জেলাঃ বাগেরহাট।  সংসার জীবনের শুরু থেকেই মিতুর উপর অমানুষিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার। কারন হিসেবে দেখা যায় মিতুর স্বামীর সমীর বিশ্বাসের ফোনে অপরিচিত নাম্বার থেকে কোন এক মেয়ের ফোন আসতে থাকে যা মিতুর নজরে আসে। দীর্ঘ বাকবিতন্ডার পর সমীর বিশ্বাস স্বীকার করে আর কখনো এমন কাজ করবে না। কিন্তু সমীর বিশ্বাসের পরকীয়া থেমে নেই। বিষয়টি জানাজানি হলে মিতু কে সমীর বিশ্বাস তার নিজ কর্মস্থল ঢাকায় নিয়ে আসে।  সেখানে এসে  মিতুকে তার পরিবারের সাথে ভাল  যোগাযোগ করতে দিত না। সেখানে ও অত্যাচার বেড়ে যায় ডিভোর্স দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এমতাবস্থায় মিতু ঢাকার মিরপুর হতে নিজ বাপের বাড়ি এসে গোপালগঞ্জ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়ের করে। মামলা নং ১৭৫/১৫ মামলার তারিখ ১৬/০৭/২০১৫ খ্রিঃ। পরে আদালতের নির্দেশে মীমাংসা করে মিতুকে সমীর বিশ্বাস ঢাকার মিরপুরে বাসায় নিয়ে যায়। মিতু তার স্বামী সমীর বিশ্বাসের সাথে ই ডেকো নীট ওয়্যার গার্মেন্টসে চাকুরী করতে থাকে। কিছু দিন পর আবার সেই মারধর, গালিগালাজ শুরু করে। এতে মিতু বাধ্য হয়েই পল্লবী থানায় জিডি করে।  এর মধ্যে মিতুর ২০১৯ সালে মার্চ মাসে একটা কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তবুও মিতুর প্রতি কমেনি অত্যাচার ও নির্যাতন বা সমীরের পরকীয়া। সমীর পরকীয়া আসক্ত ওই মেয়ে কে বাসায় নিয়ে আসতো। মিতু কে বার বার ডিভোর্স দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল ও প্রায়ই বলতো তুই মরে যা, তুই মরলে আমি শান্তি পাই। এসব কথা মিতু তার মাকে বিভিন্ন সময় ফোনে জানিয়ে আসছিল। তবে তারা হিন্দু ধর্মের অনুসারী বলে সংসার টিকিয়ে রাখার চেস্টা চালিয়ে আসছিল। সমীর বিশ্বাসের সামান্য পড়াশুনা করেছে গ্রামের স্কুলে কিন্তু বিবাহের সময় উচ্চ শিক্ষত বলে দাবি করেছিল। তবে মিতুর একমাত্র বড় ভাই জগদীশ দাসকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র নিয়ে অশিক্ষিত সমীর বিশ্বাস নিজের চাকুরির ব্যবস্থা করেছিল। তার সত্যতা পাওয়া যায় সমীরের পাশের বাসার লোকদের থেকে ও মিতুর থেকে। গত ০৭ই মে রোজ শুক্রবার আনুমানিক সন্ধ্যা ০৬ঃ০০ টার দিকে মিতুর মেজো বোনের স্বামী সুমন দাস মিতুর বড় ভাই জগদীশ দাসকে  ফোনে জানায় মিতুর লাশ পল্লবী থানায়  আছে পল্লবী থানার এস.আই পিন্টু কুমার চৌধুরী ফোন করে জানিয়েছেন। একথা শুনে মিতুর বড় ভাই জগদীশ দাস পল্লবী থানায় গিয়ে মিতুর লাশ দেখতে পায়।  এস.আই পিন্টু কুমার চৌধুরী বাসার মালিক ও স্থানীয়দের সহয়তায় ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে আসা সমীর বিশ্বাস  কে পল্লবী থানায় পুলিশ হেফাজতে দেখতে পায়। পুলিশ জানায় মিতুকে দরজা খোলা অবস্থায় বিছানায় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পেয়েছে এবং পাশে স্বামী সমীর বিশ্বাসকে লোকজন ঘিরে রেখেছে। পরে ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করে মৃত্যুর ব্যাপার নিশ্চিত হয়।পল্লবী থানার ওসি সাহেবের নির্দেশ সত্বেও এস.আই পিন্টু কুমার চৌধুরী আত্বহত্যা প্ররোচনা মামলা নিতে গড়িমশি করলে পরের দিন ০৮ই মে, ২০২১খিঃ রোজ শনিবার আনুমানিক বিকাল  ০৩ঃ৩০টার দিকে ওসি সাহেবের পুনরায় নির্দেশে মিতুর বড় ভাই জগদীশ দাস বাদী হয়ে সমীর বিশ্বাসের নামে আত্বহত্যা প্ররোচনায় আত্বহত্যা ৩০৬ ধারায় মামলা এজাহার ভুক্ত করেন। মামলার নং ২০/৩৪০। মিতুর পোস্টমর্টেম শহীদ সরোওয়ার্দী হাসপাতালে সম্পূর্ণ হলে ওই দিন  নিজ জেলা গোপালগঞ্জে নিয়ে সৎ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়। এমতাবস্থায় বিবাদী জগদীশ দাস পোস্টমর্টেম রিপোর্ট কবে নাগাদ পাবেন সে  অপেক্ষায় আছেন। রিপোর্টটি হাতে পেলে পরবর্তী ব্যবস্থার গ্রহনের জন্য সচেষ্ট হবেন যাতে করে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যু দন্ড কার্যকর হয়।

অর্থ ও বাণিজ্য এর আরও খবর: