প্রিয় কবি ও লেখক আদিল মাহমুদের একগুচ্ছ কবিতা-২।
(সংগ্রহে সাজ্জাদ হোসেন সাখাওয়াত)
৬."মহাবিশ্বের কথা"
বিশ্বব্রহ্মাণ্ড খোদার, থাকে না সন্দেহ,
বিংশ কোটি সহস্রাব্দ খোঁজে, নাহি দেখা।
বিকল্পিত হয়ে, পাবে না ঈশের শিখা,
বিফল তোমার চেষ্টা, বাড়বে প্রদাহ।
বিকশিত বিশ্বপতি, জ্ঞানী বুঝে তাহা,
বিকল্প দেখা যায় না, সৃষ্টির কোথাও।
বিশ্বে একমাত্র রব, যথা তুমি যাও,
বিকিরিত সৃষ্টিকর্তা, আল্লাহর স্পৃহা।
বিকীর্যমান ইলাহি, নত হও তথা,
বিধাতার রচনায়, করো আত্মদান।
বিধিমালা লেখা আছে, মান্য করা প্রথা,
বিঘাতক সাবধান, আল্লাহ মহান।
বিঘূর্ণন নাহি দেরি, বাঁচাবে না গাথা,
বিচেষ্টা জানেনা, ঈশ সর্ব শক্তিমান।
৭.
"পুলিশ, ডাক্তার ও নার্স"
ডাক্তার,পুলিশ,নার্স লোকের সংসার,
ডাক্তারখানা বিহীন জীবন, অসার।
ডাকসাইটে পুলিশ, মনে অহংকার,
ডাটন ত্যাজ্য, পুলিশ জনের বাহার।
নার্স মানবের আশা, মর্তের সোপান,
নাখোশ নহে সেবিকা,বাঁচাবে মানুষ।
নাগাড় সেবা দিয়েছে,তারা তুষ্ট প্রাণ,
নাজুক পরিস্থিতিতে,ছাড়েনি যে হুশ।
পুলিশ, ডাক্তার, নার্স দেশের সম্পদ,
পুটিত আজ পুলিশ, নর’কে বাঁচাতে।
পূণ্যকৃৎ তারা,বাংলার করোনা ঠেকাতে,
পূণ্যশীল দেহে, কর্ম পালনে সায়ব।
পূণ্যদর্শন প্রস্তুত, আলোক আনতে।
পুলিশ সদা জাগ্রত, তৈরি অবয়ব।
৮.
"বাবা তুমি মহান"
বাবুজি আমি তোমায়,সদা ভালোবাসি,
তুমি দশের জনক, বাঁচার সদন।
পিতার আশ্রয়ে, আজ আমরা শোভন,
বাবার শিক্ষায়, মুখে মানুখের হাসি।
সন্তানের হাতিয়ার, একমাত্র পিতা,
বাপের স্নেহ মিলেনা, ছেলের অন্তরে।
বাপজান সন্তানের জন্য, নিত্য করে,
বিনিময়ে পুত্র হয়, অন্যজনে মিতা।
বাবুজী নিঃস্বার্থপর, সন্তান অকর্ম,
তাই বাবা হয়ে থাকে, সর্বকালে পুণ্য।
বসুমতিতে পিতারা, নাহি পায় ধর্ম,
বাপ নিত্য অসহায়, সন্তানেরা ধন্য।
পিতা থাকে বৃদ্ধাশ্রমে, পুত্র নয় বর্ম,
পৃথিবীতে প্রমাণিত, সন্তান নগণ্য।
৯.
"ঘৃণিত বর্ণবাদ"
বর্ণবাদ হিংসাত্মক,করো তাকে ম্লান,
বর্ণ বৈষম্য ঘৃণিত, পৃথ্বীর আইন।
বংশীয়াল কটাক্ষ করে, বর্ণে বান,
বংশপরম্পরা হয়, নিত্য কালো বর্ণ।
বংশিক প্রমাণ করে, স্বাধীন অম্লান,
বঞ্চনা রুখতে হবে, মানব সমান।
বদলোক সৃষ্টি করে, বর্ণবাদে মান,
বদনাম দূর করা, মর্তের সন্মান।
বন্দিত ন্যায্যত কৃষ্ণ,করো মূল্যায়ন,
বরণ করো কৃষ্ণাঙ্গ, তারা প্রয়োজন।
বরিষ্ঠ কালোরা, ভূ'তে মনুষ্য মহান,
বরিখা পরিলক্ষিত, কালোদের মন।
বর্বরতা হবে ত্যাজ্য,করো তবে পণ,
বহী সমতুল্য কালো, ধ্রুব নিরীক্ষণ।
১০.
"জীবন ও কর্ম"
জীবনকে ধন্য করো, প্রাণ অতি প্রিয়,
জান দিয়ে রক্ষা করো, মর্তের বিজয়।
ভাগ্য গুনে নর সেরা, মূল্য সৃষ্টিকর্তা,
স্রষ্টার সৃষ্টিতে আছে, তিনি মূল কর্তা।
ইনসান সেরা সৃষ্টি, ইলাহির মর্ম,
বিবেক ও বুদ্ধি আছে, মানুষের ধর্ম।
মূর্খরা বয়ে বেড়ায়, সৃষ্টির রহস্য,
বিদ্বান জানে, আল্লাহ সর্বত্র অদৃশ্য।
পরমাত্না দিয়েছেন সুখ, তাই ধন্য,
ভালবাসা তার তৈরি, না হলে নগন্য।
জীবে দয়া করা ন্যায্য, ভালবাসা পূণ্য,
বিশ্বপতি শক্তিধর, তাইতো অনন্য।
সেজদায় পুরো বিশ্ব, মানুষ জঘন্য,
কবর, দোজখ তৈরি, নৃ-হবে মালিন্য।
১১.
"কবরই আসল ঘর"
কবর জনের বাড়ি, জানো কি তুমি!
কখনো ভেবেছ, পোকা মাকড় উদ্যমী!
কন্ঠস্বর ধ্বংস হবে, শাপ, বিচ্ছু খাবে,
কন্টকময় জায়গা, আগুন থাকবে।
কঠিনত্ব রবে দৃশ্য, চিৎকার বিস্ময়,
কঁচুকাটা শিহরণ, দৃশ্যত তন্ময়।
কড়মড় ধ্বনি, ঢুকে কানে যেন খর,
কটাৎ সর্বদা প্রস্তুত, কবর জহর।
কড় তোমার পাহারা, চারিদিকে অগ্নি,
কতমতো বজ্রপাত তৈরি, তব গ্লানি।
কদাপি করোনি ন্যায়, নেই কোন ভীতি!
কতশত পাপ গায়, নেই কোন বাতি।
কপর্দকশূন্য তুমি, সর্বত্র উত্তাপ,
কবুল হয়েছে তোর শাস্তি, শুরু ধাপ।
১২.
"কেয়ামত আসবে"
ইস্রাফিল কেয়ামতে,যবে ধরে ভেঁপু,
ইহকালে সৃষ্ট ধন, সব তব নিচু।
ইতরামি বদমাশি, হবে বিভাবসু,
ইদানীন্তন খরগ, অস্ত্র গলে কাবু,
ইতিপূর্বে পাপ করা, পুড়ে ছাঁই বপু।
ইতিহাস সাক্ষী রবে, স্বাক্ষর দিবে ভূ,
ইজারামহাল পুড়ে গুড়া, যেন যাদু!
ইচ্ছাময় দেখে বোমা, মহান রবে সু,
ইন্দ্রজাল শাস্তি পাবে,দেখবে সুধাংশু।
ইন্দ্রিয়গম্য হিসাব দিবে, উচ্চে মিশু,
ইশতাহার দেয়াছিল, মানে নাই তনু।
ইহজগৎ বিম্ফোরিত হবে, মুখে ভানু,
ইউরেনাস সপ্তম গ্রহ, মিশে নাড়ু।
ইউরেনিয়াম ধূলা বালু ,যেন ঝাড়ু।
১৩.
"বাঙলার প্রকৃতি"
বাঙলার মনোরম, দেখে যতজন,
বিস্ময়ে হত চকিত, মোহে মুহ্যমান।
লাবন্যময় ধরার সৃষ্টি, দৃশ্য দেশে,
প্রণয়ের কীর্তি দেখা যায়, আশে পাশে।
কান্তিমান দৃশ্য মনে, যথায় তথায়,
আমরা বাঙালি ধন্য, জনের কথায়।
গুলে, খগে পুলকিত, মাটি ও আকাশ,
অন্তরাত্মা প্রস্ফুটিত, লোকের বিশ্বাস।
পিরিত সর্বত্র বহে, দৃশ্যত প্রকৃতি,
পাতক রহিত প্রাণে, জানে সর্বজনে।
মন পবিত্র অম্বুধি, আছে জনশ্রুতি,
মনোহর ও প্রেমের বন্ধন পরানে।
বাংলাদেশ বাঙালীর, গর্ব আছে প্রীতি,
হিয়ায় ভরা মমতা, পুষ্প ভরা ঘ্রাণে।
১৪."ফুলের সৌন্দর্য"
প্রত্যুষে উঠিয়া দেখি, ফুল সারি সারি,
ফুলের সৌন্দর্য ভবে, বিমোহিত বাড়ি।
আত্মার মহা আনন্দ, পুষ্পের বিকাশ,
পুষ্প গন্ধ বয়ে আনে, স্বর্গের বাতাস।
সুগন্ধি লোকের প্রাণে, আনে মহাতৃপ্তি,
স্বস্তি বিনা মানুষের মধ্যে ক্ষন ব্যাপ্তি।
বাতাসে দোদুল গুল, যেন পুলকিত,
পরম আত্মার শান্তি, বয়ে আনে নিত্য।
স্রষ্টার সৌন্দর্য ফুল, করো তাকে ধন্য,
আল্লাহর অবদান, ধরা আনে পূণ্য।
পুষ্পকে যিনি সোহাগ করে তিনি রম্য,
ভালবাসা বয়ে আনে, হৃদয়ের কাম্য।
অর্থহীন অনুরাগ, যদি থাকে মনে,
ফুলের মর্যাদা নাহি রবে স্মিত প্রাণে।
১৫
"খরস্রোতা পদ্মা নদী"
পদ্মা তুমি খরস্রোতা, চলে গেছ দূর,
তোমার তান্ডব দেখে, হতভম্ব সূর।
হাজারো তরণী বয়ে, তোমার অন্তর,
লোকজন দেখে দূরে, মাঝে মধ্যে ঘর।
নদীর মাঝে নিরব, শত শত প্রাণ,
তারি মাঝে বয়ে চলে, জনের সোপান।
দুই পাশ ভাঙ্গ তুমি, নাহি ভয় মনে,
পদ্মার থাবায় গেছে, বহু নর লোকসান।
পদ্মা আমাদের গর্ব, করেছে অম্লান,
তারি বুক ছিড়ে যাচ্ছে, লক্ষ জলযান।
স্রোতস্বিনী সাজে রঙ্গে, প্রবাহিত পণে,
গাঙের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ, সৃষ্টির রঙ্গন।
তটিনী বিস্তৃত জলে, সর্বজন জানে,
কুসুমে, প্রসূনে ধন্য, দেশের সম্মান।