" 🕊 প্রেয়সীর দেয়া বকুল ও একটি ভুল"..

কবি, 

মোঃ রফিকুল ইসলামঃ 

"হ্যাঁ আর একটু সামনে এসো,আর একটু,আর একটু...

ইয়েস",,,,

বান্ধবী অবনীকে কথাটা বলেই বকুল ফুলগুলো কাছে পাওয়ার আনন্দে দিশেহারা প্রেয়সী..

এ ফুল যে অনন্ত সাধনার ও আরাধনার জিনিস..এটা যে তার জনম জনমের সাথী অন্তুর জন্য গেঁথে রাখতে হবে... অন্তু বৃহস্পতিবারে কলেজ শেষ করে অবনীদের বাড়ীতে আসবে...অন্তু আর অবনী খালাতো ভাই বোন..প্রেয়সী অবনীর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ও একই ক্লাসে (অষ্টম শ্রেণীতে) লেখা - পড়া করে..অন্তু প্রথম প্রেয়সীকে দেখেছিলো ২০০১ সালে অবনীদের বাড়ীতে..সেই থেকে শুরু.. প্রেয়সীকে ভালো লাগে বলতো,একসাথে নদীর জলে শাপলা তুলতো,ছবি আঁকতো - এই ছবিই যে অন্তুর হৃদয়ের আঁকা ছবি হয়ে যাবে সেটা সে ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি..প্রেয়সীর মা সবই বুঝতে পারতো..তাই,অন্তুকে কাছ থেকে চেনার জন্য প্রেয়সীকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার পড়াতে বলেছিলো.." যেই কথা সেই কাজ"..অন্তুও রাজি হয়ে গেল... এস,এস,সি পাস করে প্রেয়সী উচ্চতর লেখা পড়ার জন্য মা-বাবাকে নিয়ে চলে গেল শহরে..অন্তু লেখা - পড়া শেষ করে যথারীতি স্বপ্নের বাসর সাজিয়ে রাখতো প্রেয়সীর জন্য... সবসময়ই যোগাযোগ রাখতো প্রেয়সীর পরিবারের সাথে.. অন্তুর আম্মাও প্রেয়সীকে বধূ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সবসময়ই রাজি এবং খুশি ছিলেন কারণ,প্রেয়সী উচ্চ শিক্ষিত,সুন্দরী, স্মার্ট, গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল,লম্বাকেশী ইত্যাদি.. অন্তুর মা স্বপ্নের আল্পনায় নিজের আদরের সুদর্শন ছেলের জন্য  যেমন একটা সুকন্যা চেয়েছিলেন ভাগ্য দেবতা শতভাগ সেটা মিলিয়ে দিয়েছেন.. 

কিন্তু, এ কি হায়! 

আজ সকালে অন্তুর জীবনে এ কি হয়ে গেল..?

প্রেয়সীর মা ফোন করে জানিয়েছে যে, প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা ছেলের সাথে প্রেয়সীর আগামী দিন বিয়ে...

বাইরে অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে.. এই বৃষ্টিই যে তার হৃদয়ের অন্তরালে লুকিয়ে থাকা না বলা কথা গুলো বলে যাবে অহর্নিশি - সেটা কখনো ভাবতেও পারেনি অন্তু...

শুধু একটি ভুল - প্রেয়সীকে 'ভালোবাসি' এ কথাটি না বলা..

আর "একটি বকুলের মালা"...

এই দুটিই অন্তুর জীবনের শেষ সম্বল..

ও হ্যাঁ সেদিন হাইওয়ে রোডে পেন্সিল হিল আর কালো চশমার

ফাঁকে প্রেয়সীকে এক পলক দেখেছিলো অন্তু...

প্রেয়সী শত ব্যস্ততার মাঝেও 

ডেকেছিলো অন্তুকে..কিন্তু,

১৯ বছরের সকল স্মৃতি বুকের সমাধিতে চাপা দিয়ে দিগন্তের পানে চেয়ে প্রেয়সীর দেয়া সেই বকুল ফুল বুকের সাথে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে যায় অন্তু..

প্রেয়সীর মুখের আওয়াজ শূন্যে মিলিয়ে যায়... 

কোন সাড়া মিলেনা....!!!!