চাইলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন সখীচরন রায়ের বাড়ি।

 প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২০, ০৬:০৮ অপরাহ্ন   |   গোপালগঞ্জ জেলা


বারাশিয়া নদীর পূর্বপাড়ে ১.৭
শতাংশের এক চিলতে জমি৷ ততকালিন
জমিদার গিরীশ চন্দ্র সেনের বাড়ি
থেকে ৫০০ গজ উত্তর-পশ্চিমে এবং
বর্তমান কাশিয়ানী এম.এ খালেক
সরকারী বালিকা বিদ্যালয়
লাগোয়া পশ্চিম পাশের জমিটুকুর
অবস্থান৷ জানা যায় এই এক চিলতে
জমির ওপর প্রথমে ছোট্ট একটি টিনের
ঘর ছিল৷ মানুষের চোখে পড়ার মত কিছুই
ছিলনা৷ অভাবের যন্ত্রনা ডুকরে ডুকরে
কেঁদে উঠত এই ঘরে৷ কিন্তু বেশি দিন
না যেতেই টিনের ঘরটি রূপ পায় ইট
পাথরের এক আনন্দাশ্রমে৷ সুনিপুণ
কারুকার্য আর সুদর্শন ভঙ্গিমায়
দন্ডায়মান বাড়িটি নিমিষের মধ্যেই
কাশিয়ানীবাসীকে তাক লাগিয়ে
দেয়৷ জনমনে উচ্চারিত হয় এটি
সখীচরনের বাড়ি৷ বারাশিয়া নদীর
কলকল দ্বনিতে আন্দোলিত ছিল
পশ্চিমমুখী এই বাড়িটি৷ চারপাশে
ছিল উঁচু প্রাচীর৷ দিবা-নিশি বিনিদ্র
মাথা উঁচু করে পাহারা দিত অনেক
গাছ-গাছালি৷ দ্বিতল ভবনটির
দোতলার সম্মুখ ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে
উপভোগ করা যেত প্রকৃতির অপার
মহিমা৷ ব্যালকনির দুপাশে দুটি কক্ষ,
পিছনের বড় কক্ষটিকে বাহুর মত আগলে
ধরে রেখেছে৷ বড় কক্ষের পিছনে
রয়েছে দুটি লম্বা বারান্দা৷ প্রধমটির
উত্তর প্রান্তে দোতলায় উঠতে সিঁড়ি
রয়েছে৷ মূল ভবনের পিছনে তিন কক্ষ
বিশিষ্ট একটি একতলা ছোট্ট পাকা
ভবন রয়েছে৷ জানা যায় এটি তখন
রন্ধনশালা হিসেবে ব্যবহৃত হত৷ এহেন
স্বপ্নের সুরম্য বাসভবনের মধ্যে সখীচরন
রায় নিজেকে লুকিয়ে রাখেননি৷
সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে
বিলিয়ে দিয়েছেন৷ কাশিযানীর
শ্বশ্মানভূমি (১০ শতাংশ) তিনিই দান
করেছেন৷ ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের
সময় সবকিছুর মোহ ত্যাগ করে সমাজদরদী
এই সখীচরন পাড়ি জমান ভারতে৷ রয়ে
যায় তাঁর অমর কীর্তি লাল রঙের
বাসভবনটি৷ বাড়িটি দেখভালের জন্য
অবস্থান করে কাশিয়ানীর শান্তি
রাম খাঁর মা৷ জনশূণ্য বাড়িটি পরবর্তী
সময়ে সার্কেল অফিসার
(ডেভেলপমেন্ট) -এর কার্যালয়
হিসেবে আবার প্রাণ ফিরে পায়৷
সময়ের পরিবর্তনে এটি ১৯৬৭ সালের
ফেব্রুয়ারী মাসে সার্কেল অফিসার
(রাজস্ব)-এর কার্যালয় হিসেবে
প্রতিস্থাপিত হয়৷ কিন্তু ১৯৬৯ সালের
দিকে দেখা দেয় ছন্দপতন৷ সার্কেল
অফিসারের দাপ্তরিক কাজ কর্ম
স্থানান্তর করে নেয়া হয় সীতানাথ
সরকারের বাড়িতে (বর্তমানে
উপজেলা চেয়ারম্যান কার্যালয়ের
পিছনে)৷ স্বাধীন বাংলাদেশ
প্রতিষ্ঠার পর অফিসটির উপর আবার
নেমে আসে অস্থিরতা৷ অফিসের
যাবতীয় কাগজপত্র গুটিয়ে আবার
ফিরে যেতে হয় সখীচরন রায়ের বাড়ী।
বর্তমানে এই বাড়ী টি কাশিয়ানী উপজেলা ভূমি অফিস হিসাবে সেবা দিয়ে জাচ্ছেন সকলকে।

গোপালগঞ্জ জেলা এর আরও খবর: