খুলনার কয়রায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন না উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সম্পাদক।
কয়রা প্রতিনিধি :
খুলনার কয়রা উপজেলায় সরকারের প্রত্যক্ষ উপকারভোগী জনসাধারণের পক্ষ হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন না উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম মহসীন রেজা ও সাধারণ সম্পাদক নিশিত রঞ্জন মিস্ত্রি।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) উপজেলা পরিষদের মাঠে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর অনুষ্ঠানে মঞ্চের ব্যানারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নাম ছিল না। এ ছাড়া সরকারের নানা ধরনের সহায়তা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৭টি ইউনিয়ন থেকে সুবিধা ভোগিদের অনুষ্ঠানে হাজির করা হয়েছে। অনুষ্ঠান বাস্তবায়নেও দলীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কোনো প্রকার সমন্বয় করা হয়নি। এসব কারণেই অধিকাংশ নেতৃবৃন্দরা সভায় হাজির হননি। এ ছাড়া ক্ষোভের কারণে অনুষ্ঠানে হাজির হয়েও সভা মঞ্চে ওঠেননি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম মোহসিন রেজা ও সাধারণ সম্পাদক নিশিত রঞ্জন মিস্ত্রী,
কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম মোহসিন রেজা বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানটি করে উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে। যেহেতু এলাকায় মাইকিং করে উপকার ভোগীদের ভয় ভীতি দেখিয়ে তাদের আনা হয়েছে। বলা হয়েছে অনুষ্ঠানে না এলে সরকারের সকল সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আরো বলা হয়েছে এ অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকবেন এই আশায় উপকার ভোগীরা শেখ হাসিনা কে এক নজর দেখার জন্য কেউ আর ঘরে বসে থাকেনি । সুন্দরবন উপকূলের দুর্গম পথ অতিক্রম করে দুস্থ গরিব অসহায় মানুষের আসতে বাধ্য করা হয়েছে। তাছাড়া আমার দলীয় কোন নেতৃবৃন্দকে জানানো হয়নি। এমনকি আমার উপজেলার সাধারণ সম্পাদককে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে,
তিনি বলেন, ‘আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদার ও মানবিক। তিনি মানবতার মা, কোনো প্রকার বিনিময় প্রাপ্তির জন্য সহায়তা করেননি। অনুষ্ঠান প্রচারণার ক্ষেত্রে দলীয় সভানেত্রীকে ছোট করা হয়েছে। চরম একটা অগোছালো অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
তিনি আরও বলেন, ‘অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হলে দলের ভাবমূর্তি এভাবে ক্ষুন্ন হতো না। মূলত এসব কারণেই আমার দলীয় নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্ধ, যে কারণে আমার নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির হলেও সভা মঞ্চে উঠতে পারিনি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিশিত রঞ্জন মিস্ত্রী বলেন, স্থানীয় ও তৃনমুল পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে এ ধরনের একটি অনুষ্ঠান দেখে বিস্মিত হয়েছি। আমরা চেয়েছিলাম আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠানটি বাস্তবায়ন করতে। কিন্তু সেটা কার পরামর্শে উপজেলা প্রশাসন এ সভা করেছেন সেটা বোধগম্য নয়। কিছু না হলেও দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতামতের ভিত্তিতে এ ধরনের অনুষ্ঠান করলে আগামী দিনের জন্য ভালো একটা ফলাফল উপলব্ধি করতে পারতাম, কারণ দলের জন্য ভালো হতো এবং সংগঠন গতিশীল ও শক্তিশালী হতো।