যশোর ডিবি পুলিশের অভিযানে খালধার রোড কর্তৃক বাসা ভাড়া নিয়ে 'হানি ট্র্যাপের' মাধ্যমে টাকা আদায় চক্রের ৬ সদস্য গ্রেফতার।

 প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:১৭ অপরাহ্ন   |   সারাদেশ




মনা,যশোর প্রতিনিধিঃ

ঘটনা ও গ্রেফতারের বিবরণঃ 

যশোর ঝিকরগাছা থানাধীন ফুলবাড়ি গ্ৰামের বিপুল হোসেনের স্ত্রী বাদী সালমা বেগম(৪২) ঝিকরগাছা থানায় অভিযোগ করেন যে, তার ছেলে মোঃ আশিকুর রহমান(২৬)কে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে মহিলা দিয়ে ডেকে নিয়ে একটি চক্র ফাঁদে ফেলে মুক্তিপণ চাচ্ছে। যশোর জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ মহোদয় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করেন এবং রহস্য উদঘাটনের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কে নির্দেশ প্রদান করেন।


উক্ত অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা শাখা(ডিবি), যশোর ইং ২৫/০১/২০২৫খ্রিঃ কোতয়ালী মডেল থানাধীন খালধার রোড আমিনিয়া মাদ্রাসা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিম মোঃ আশিকুর রহমান(২৬) কে উদ্ধার করে এবং পরবর্তীতে ভিকটিমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী খালধার রোডে বাসা ভাড়া নিয়ে 'হানি ট্র্যাপের' মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় চক্রের সক্রিয় ০৬(ছয়) সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ৬নং আসামী লক্ষী রানী সরদার, রাবেয়া খাতুন(২৯) এর সাথে ভিকটিমের পূর্ব পরিচয়ের একপর্যায়ে গত ইং ২৫/০১/২০২৫খ্রিঃ বেলা অনুমান ১২.৩০ ঘটিকায় ভিকটিম আশিকুর রহমান(২৬)কে ঝিকরগাছা থেকে যশোর শহরাস্থ খালধার এলাকার একটি বিল্ডিং এর নিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে রুমে প্রবেশ করার সাথে সাথে আগে থেকে ওতপেতে  থাকা অভিযুক্তরা আটকে রাখে এবং মারপিট করে মুক্তিপণ চায়। অন্যদিকে অভিযুক্ত লক্ষী ভিকটিমকে রুমে ঢোকানোর সাথে সাথে বাইরে দিয়ে দরজা আটকে দেয়।


একপর্যায়ে সংঘবদ্ধ চক্রটি ভিকটিম মোঃ আশিকুর রহমানের মুক্তিপণ হিসেবে পরিবারের কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবী করে এবং ভিকটিমের পরিবার তাৎক্ষণিক বিকাশের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা আসামীর কাছে পাঠিয়ে দেয়।


পরবর্তীতে আসামীরা ভিকটিমের পরিবারকে হুমকি দিতে থাকে যদি যথা সময়ে বাকি মুক্তিপণ না দেওয়া হয় তবে তারা ভিকটিমকে মেরে গুম করে দিবে। 


বাদী তখন বিষয়টি ঝিকরগাছা থানা পুলিশকে অবহিত করে এবং ঝিকরগাছা থানা পুলিশ বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন এবং সম্মানিত পুলিশ সুপার যশোর মহোদয়ের নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) যশোর ইং ২৫/০১/২০২৫খ্রিঃ ভিকটিমকে উদ্ধার পূর্বক অভিযান পরিচালনা করে রাত ০০.৩০ ঘটিকায় ০১নং আসামী মোঃ ফাহিম হোসেন কে গ্রেফতার করে এবং তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের তার সাথে থাকা অন্যান্য আসামীদের নাম ঠিকানা বলে দেয়। 


পরবর্তীতে অদ্য ২৬/০১/২০২৫খ্রিঃ রাত ০০.৩০ঘটিকা থেকে সকাল ০৯.৪৫ ঘটিকা পর্যন্ত কোতয়ালী মডেল থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ডিবি পুলিশ। গ্রেফতারকৃত সকলেই পুলিশের নিকট ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।


আসামীরা দীর্ঘদিন যাবত যশোর কোতয়ালী মডেল থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া করে দুষ্কর্মে লিপ্ত নারীদের দিয়ে সুকৌশলে ভিকটিমকে বাসায় ডেকে নিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে আগত ভিকটিমকে আটকে রেখে তাদের পরিবারের নিকট ফোন দিয়ে নগদ অর্থ আদায় সহ ভিকটিমের কাছে থাকা ব্যবহৃত মোবাইল, মোটরসাইকেল এবং নগদ অর্থ জোর পূর্বক কেড়ে নিত। 


এ সংক্রান্তে ভিকটিমের মাতা বাদী হয়ে ঝিকরগাছা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম ও ঠিকানাঃ


১। মোঃ ফাহিম হোসেন(২৪), পিতা-আঃ মজিদ, সাং-উপশহর(বি-ব্লক), থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর,


২। মোঃ মেহেদী হাসান রাব্বী(২৭), পিতা-মোঃ আব্দুর রহিম, মাতা-মোছাঃ আছিয়া বেগম, সাং-বাহাদুরপুর(বাশপাড়া), থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর,


৩। মোঃ মারুফ হোসেন(২৫), পিতা-মোঃ হারুন-উর-রশিদ, সাং-মধুগ্রাম(ঈদগাহ মোড়), থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর,


৪। মোঃ ছাব্বির হোসেন(২৫), পিতা-মোঃ শুকুর আলী, সাং-শংকরপুর(টার্মিনাল), থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর,


৫। শাহরিয়ার হোসেন @  রোহান(১৯), পিতা-মৃত মতিয়ার রহমান, সাং-বেজপাড়া (রানার অফিস), থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর,


৬। লক্ষী রানী সরদার@  রাবেয়া খাতুন(২৯), পিতা-মৃত অশোক কুমার দাস, মাতা-সাধনা রানী দাস, সাং-বেজপাড়া(দিঘীরপাড়), সর্ব থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর


উদ্ধারঃ

১। ০৩(তিন)টি মোবাইল (ভিকটিমের মোবাইল সহ আসামিদের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল)।

সারাদেশ এর আরও খবর: