প্রতারক চক্রের খপ্পরে দুই অনলাইন শাড়ী ব্যবসায়ী; জামদানি শাড়ী উদ্ধারসহ প্রতারক চক্রের চার সদস্য গ্রেফতার

মনা নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে দুই অনলাইন শাড়ী ব্যবসায়ী প্রায় তিন লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ৩১টি জামদানি শাড়ী হারান। এই ঘটনায় রুজুকৃত মামলায়
প্রতারক ও চোর চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির দক্ষিণখান থানা পুলিশ।
বুধবার (১৪ মে ২০২৫ খ্রি.) রাত ০২:০৫ ঘটিকায় দক্ষিণখান থানাধীন কসাইবাড়ী হাজী মার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-১। মেহেদী হাসান শাওন (২৪) ২। মো. আশরাফুল (২১) ৩। সাব্বির হোসেন রিমন (২৫) ও ৪। মো. সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ (২৫)। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে চুরি হওয়া ১১টি জামদানি শাড়ী উদ্ধার করা হয়।
দক্ষিণখান থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১২ মে ২০২৫ খ্রি. তারিখে দক্ষিণখান থানাধীন মোল্লারটেক কসাইবাড়ী এলাকায় প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েন দুই ব্যবসায়ী, নুর মোহাম্মাদ রাব্বি (২৪) ও তার বড় ভাই ছহিম (৩৫)। তারা জামদানি শাড়ী বিক্রির জন্য ওই এলাকায় যান এবং সেখানে প্রতারকদের হাতে নিগৃহীত হন । এই ঘটনায় ১৪ মে ২০২৫ খ্রি. তারিখে দক্ষিণখান থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মাদ রাব্বি।
দক্ষিণখান থানা সূত্রে আরো জানা যায়, বাদী নুর মোহাম্মাদ রাব্বি নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানা এলাকা হতে তার ফেসবুক পেইজ "Jamdani Gram–জামদানী গ্রাম" এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ডার নিয়ে জামদানি শাড়ী বিক্রি করতেন। অজ্ঞাতনামা এক নারী ক্রেতার সাথে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কথাবার্তার একপর্যায়ে ক্রেতা তার বোনের বিয়ে উপলক্ষে ৭/৮টি জামদানি শাড়ী কাপড় ক্রয় করবে বলে জানায়। নারী ক্রেতা শাড়ী যাচাই করার জন্য ২০/২৫টি জামদানি শাড়ী দক্ষিণখান থানাধীন মোল্লারটেক বটতলায় নিয়ে আসার জন্য বলে। তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে বাদী সরল বিশ্বাসে তার বড় ভাই ছহিমকে সাথে নিয়ে গত ১২ মে ২০২৫ খ্রি. সন্ধ্যা আনুমানিক ০৭:২০ ঘটিকায় ৩১টি জামদানি শাড়ী নিয়ে সিএনজি যোগে উক্ত স্থানে যায়। তখন সেই অজ্ঞাতনামা নারী ক্রেতাকে ফোন করলে সে বাদীকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার জন্য বলে। তার কথামত বাদী ও তার ভাই উক্ত স্থানে অপেক্ষা করতে থাকে। প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর অজ্ঞাতনামা চারজন লোক ক্রেতা মুন এর পরিচয় দিয়ে বাদীকে একটি অন্ধকার গলির ভেতরের দিকে যেতে বলে। বাদীর সন্দেহ হলে তিনি দ্রুত জামদানি শাড়ী নিয়ে সিএনজিসহ উক্ত স্থান হতে রওনা করেন। পথিমধ্যে কাসাইবাড়ী বাজারের দিকে যাওয়ার সময় অজ্ঞাতনামা সেই ক্রেতা বাদীকে ফোন করে তার নিকট থেকে জামদানি শাড়ী ক্রয় করবে বলে আশ্বস্ত করে এবং কসাইবাড়ী এলাকার কানাডা প্লাজার সামনে থাকার জন্য বলে। বাদী রাত আনুমানিক ০৮:১০ ঘটিকায় সেখানে পৌঁছানোর পর হঠাৎ ১০/১২ জনের একটি দুষ্কৃতকারী দল তাদের উপর আক্রমণ করে। তারা এলোপাতাড়ি কিল, ঘুসি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে ১৯টি জামদানি শাড়ীর একটি গাইট ছিনিয়ে নেয়, যার মূল্য প্রায় তিন লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
থানা পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, উক্ত ঘটনায় মামলা রুজুর পর ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযুক্তদের মধ্য থেকে চার জনকে শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর ১৪ মে ২০২৫ খ্রি. রাত আনুমানিক ০২:০৫ ঘটিকায় দক্ষিণখান থানাধীন কসাইবাড়ী হাজী মার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে চুরি হওয়া ১১টি জামদানি শাড়ী উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য দুই লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা।
দক্ষিণখান থানা পুলিশ জানায়, অভিযুক্তরা পেশাদার চোরচক্রের সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।