গোপালগঞ্জে ১৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি।

 প্রকাশ: ০৫ অগাস্ট ২০২০, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন   |   অর্থ ও বাণিজ্য


 গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

 গোপালগঞ্জে মধুমতি, কুমার নদ, শৈলদহ, বাঘিয়ারকুল, ঘাঘর নদী ও এমবিআর চ্যানেলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে জেলার ২০টি গ্রামের প্রায় ১৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।


পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, মধুমতি নদী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার এবং মধুমতি বিলরুট চ্যানেলে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিন্টার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।


নতুন করে কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের কলাবাড়ি ও বৈকন্ঠপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, ব্রিজ-কালভার্ট, পোল্ট্রি ফার্ম তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে মরিচসহ শাক-সবজির ক্ষেত। বন্যা কবলিত পাঁচশ’ পরিবার বিভিন্ন স্কুল ও রাস্তার পাশে কুঁড়ে ঘর বানিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।


গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সিংগা, হাতিয়াড়া, পারুলিয়া, মাহমুদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বন্যায় ছোট-বড় প্রায় ছয় শতাধিক মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। অনেকে পুকুরের চারপাশে জাল ও বাঁশের বানা দিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি। এতে আনুমানিক প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্যচাষীরা। এ ছাড়া অবকাঠামোগতও বেশ ক্ষতি হয়েছে।


ক্ষতিগ্রস্ত অধিকাংশ মৎস্যচাষীরা বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও, সমিতি ও স্থানীয় সুদ কারবারিদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে মাছ চাষ করেছিলেন। বন্যায় মাছ ভেসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষীরা সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।




উপজেলার হাতিয়াড়া গ্রামের উপজেলার মৎস্যচাষী মো. ছাওবান বলেন, ‘দুটি পুকুরে রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, পাংগাস, পুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেছিলাম। বন্যায় পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। জাল দিয়ে আটকানোর সুযোগও পাইনি। এতে অন্তত ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে আমার। এরকম আরও অনেক চাষির মাছ ভেসে গেছে। এসব মাছ চাষিদের সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতার দাবি জানাচ্ছি।’


কাশিয়ানী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিদের তালিকা করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে এবং চাষিদের সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।’


কাশিয়ানী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বন্যাকবলিত পরিবারের মাঝে সরকারি ত্রাণ তহবিল থেকে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।’


জেলা প্রশাসক সাহিদা সুলতানা জানান, বন্যাবকলিতদের খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দুর্গতদের সাহায্যের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন চাল এবং শিশু, গো-খাদ্য ও শুকনা খাবারের জন্য ছয় লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে

অর্থ ও বাণিজ্য এর আরও খবর: