কানাইঘাটে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ত্রাণ আত্মসাতের ঘটনা সাজিয়ে জনগণ নিয়ে বিক্ষোভ।

 প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২০, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন   |   সিলেট


এম আব্দুল করিম,সিলেট জেলা প্রতিনিধি :

কানাইঘাট ৫নং বড়চতুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাও. আবুল হোসেন চতুলী খাদ্য সামগ্রী আত্মসাত করেছেন এমন অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে জনসাধারণকে উস্কে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।


রোববার (২৬ এপ্রিল) ইফতারের পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সম্মুখে উৎসুক জনতা জড়ো হয়ে চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান রাত সোয়া ৮টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে লোকজনদের শান্ত করেন।


চেয়ারম্যান আবূল হোসেন জানিয়েছেন, তিনি যথারীতি মাষ্টার রুল মেন্টেইন করে তার ইউনিয়নের রাঙ্গারাই গ্রামের ট্রলি চালক শামীম আহমদকে সরকারী অনুদানের চাল সহ একটি খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট ও শিশু খাদ্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নিজ বাড়িতে চলে যান।


তিনি বাড়িতে চলে যাওয়ার পর ইউনিয়নের কতিপয় লোকজন যারা সব-সময় ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন মূলক কার্যক্রমকে বাঁঁধাগ্রাস্ত করে আসছে এবং আমার সাথে ব্যক্তিগত শত্রুতার কারনে আমি সরকারী ত্রাণ আত্মসাত করেছি মর্মে সহজ সরল লোকজনকে আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হয়।


তারা দরিদ্র ট্রলি চালক শামীম আহমদের খাদ্যের প্যাকেট তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় কেড়ে নিয়ে নাটক সাজিয়ে আমি খাদ্য সামগ্রী আত্মসাত করেছি মর্মে এলাকায় গুজব রটায়। উৎসুক জনতাকে আমার বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা নানা ধরনের মিথ্যা কথা প্রচার করে কিন্তু সরকারী ত্রাণ আত্মাসাততো দূরের কথা এ ধরনের নিগৃত ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। দিনরাত মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে যাতে করে আমার ইউনিয়নের অসহায় মানুষের পাশে খাদ্য সামগ্রী দাঁড়ান সেটাও করে যাচ্ছি।


ইউপি সদস্য তাজ উদ্দিন ও ওলিউর রহমান জানিয়েছেন চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে। আজ সরকারী চাল ইউনিয়ন পরিষদে আসার পর ৯টি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে চেয়ারম্যান মাস্টাররুল করেন।


সেই চাল আগামীকাল সোমবার (২৭ এপ্রিল) বিতরণ করা হবে পরিষদ থেকে। মাস্টাররুল করার পর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চেয়ারম্যান আবুল হোসেন একজন ট্রলি চালককে মাস্টারুলে নাম থাকায় তাকে চাল সহ একটি খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট দেন। 


সেই প্যাকেটটি কিছুলোকজন ট্রলি চালকের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে চেয়ারম্যান ত্রাণ আত্মসাত করেছেন মর্মে সাধারণ জনগণকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয় কু-চক্রী মহল। যা সঠিক ভাবে তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।


নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সমস্যা হচ্ছে জেনে রাত সোয়া ৮টার দিকে সেখানে যাই এবং লোকজনকে শান্ত করি।


ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যা মুবশির আলী ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আলম জামিল সহ অনেকের সাথে কথা বলেছি।


আগামীকাল সোমবার আমার কার্যালয়ে চেয়ারম্যান আবুল হোসেন সহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ও যারা ঘটনাস্থলে ছিলেন এবং ত্রাণের আত্মসাতের অভিযোগ আনছেন তাদের নিয়ে বৈঠকে বসে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করব।


ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ত্রাণ আত্মসাত করছেন এমন অভিযোগ এনেছেন দূর্গাপুর গ্রামের কালাই কবির। তার অভিযোগ আজ ইফতারের ১০/১৫মিনিট পূর্বে চেয়ারম্যান আবুল হোসেন তার পরিষদ থেকে ট্রলি চালক শামীম আহমদ সহ চেয়ারম্যান তার পরিচিত লোকজনদের মাঝে সরকারী খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে শামীমের খাদ্যের প্যাকেট আটক করার পর সেখানে খবর পেয়ে লোকজন জড়ো হন এবং চেয়ারম্যানের এসব কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেন।

সিলেট এর আরও খবর: