ঝিকরগাছায় দশ বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন সহ ধর্ষক আপন ফুফাতো ভাই নয়ন কে গ্ৰেফতার করল ঝিকরগাছা থানা পুলিশ।

মনা নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
বাদী আব্দুল জলিল(৪০) ঝিকরগাছা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে এজাহার দায়ের করেন তার বড় মেয়ে বয়স দশ বছর সে বায়সা এবতেদায়ী দাখিল মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেনীতে লেখাপড়া করে। গত ইং-০৭/০৬/২০২৫খ্রিঃ সকাল অনুমান ১০.৩০ ঘটিকায় ঝিকরগাছা থানাধীন হাড়িয়া গ্ৰামে তার ছোট ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে যায় এবং এর কিছুক্ষণ পর বাদীর সাত বছরের ছেলেও তার বোনের পিছু পিছু ফুফু বাড়িতে চলে যায়।
একই দিন অনুমান দুপুর ১২.০০ ঘটিকায় ভিকটিমের ফুফাতো ভাই মোঃ নয়ন (১৯) হাড়িয়া থেকে কোরবানির মাংস কাটার জন্য বাড়িতে আসে এবং তার সাত বছরের মামাতো ভাইকে মামা(বাদী) বাড়ি দিয়ে যায়।
এমতাবস্থায় ভিকটিম ও তার ফুফাতো বোন তন্নী(১২) বাদীর বোনের বাড়িতে খেলাধুলা করার একপর্যায়ে তন্নী কিছুটা অসুস্থতা অনুভব করে এবং তার শয়নকক্ষে চলে যায়।ভিকটিম তখন একা একা গোয়াল ঘরের দরজায় টানানো দোলনায় দোল খেতে থাকে।
পরবর্তীতে ভিকটিমের ফুফাতো ভাই নয়ন(১৯) জোহরের নামাজ শেষ করে বাড়িতে গিয়ে তার বোন তন্নীকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পায় এবং তাকে ডেকে তোলে।
তারপর ভিকটিমকে দেখতে না পেয়ে বাড়ীর আশপাশে খোঁজা-খুঁজি করতে থাকে।
একপর্যায়ে তারা ভিকটিমকে খুঁজে না পেয়ে ভিকটিমের বাড়িতে চলে যায় এবং বিষয়টি পরিবারের নিকট জানায়। এরপর থেকে সবাই মিলে সম্ভাব্য প্রতিটি জায়গায় খুঁজতে থাকে কিন্তু ভিকটিমকে কোথাও পাওয়া যায় না।
পরবর্তীতে ঘটনার পরের দিন ইং-০৮/০৬/২০২৫খ্রিঃ সকাল অনুমান ০৬.০০ ঘটিকায় বাদীর ভগ্নিপতি মোঃ ইলিয়াছ হোসেন(৪৫) তার বাড়ির পশ্চিম পাশের একটি পুকুরের পানিতে ভিকটিমকে উপুড় হয়ে ভেসে থাকতে দেখে চিৎকার করতে থাকলে আশেপাশে থাকা লোকজন ছুটে আসে এবং ভিকটিমের মৃত দেহ পুকুর হতে উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে বাদীকে খবর দিলে সে গিয়ে দেখতে পায় তার মেয়ের ঠোটে জখমের চিহ্ন এবং মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।
এরপর বাদী ঝিকরগাছা থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ঠ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
বাদীর এজাহারের প্রেক্ষিতে জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব রওনক জাহান মহোদয় ঘটনার রহস্য উদঘাটন সহ আসামি গ্ৰেফতারে থানা পুলিশকে নির্দেশনা প্রদান করলে ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে এসআই(নিঃ)/ পলাশ দাস ও সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে একটি টিম ইং১১/০৬/২০২৫খ্রিঃ সন্ধ্যা ১৮.৫০ ঘটিকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমের ফুফাতো ভাই নাজমুস সাকিব নয়ন(১৯) কে তাদের বসত বাড়ি হতে গ্ৰেফতার করে এবং তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় ঘটনার দিন তার মামাতো ভাই রিয়াজকে মামা বাড়ি দিয়ে বাড়িতে এসে দেখে তার ছোট বোন তন্নী রুমে ঘুমিয়ে আছে এবং বাইরে মামাতো বোন(ভিকটিম) দোলনায় দোল খাচ্ছে। ভিকটিমকে একা দেখে নয়নের মনে যৌন বাসনা জাগে এবং সে ভিকটিমকে জাপটে ধরে তার রুমে নিয়ে গলা ও মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
একপর্যায়ে ভিকটিম শ্বাসরোধে মারা গেলে আসামি নয়ন তখন ভিকটিমকে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ফেলে দিয়ে আসে এবং তার বোনকে ঘুম থেকে জাগিয়ে বিষয়টি গোপন করতে ভিকটিমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে মিথ্যা কাহিনী সাজাতে থাকে। এরপর নয়ন তার বোনকে নিয়ে মামা বাড়ি যায় এবং ভিকটিমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায়।
গ্ৰেফতারকৃত আসামি নয়ন মনিরামপুর থানাধীন মাছনা কাওমী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। এসংক্রান্তে আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আসামির নাম ও ঠিকানাঃ
১। মোঃ নাজমুস সাকিব @ নয়ন (১৯), পিতা-মোঃ ইলিয়াস রহমান।