শ্রীমঙ্গলে ময়লার ভাগাড় স্থানান্তর এর দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
জায়েদ আহমেদ, স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের কলেজ রোডের ময়লার ভাগাড়টি স্থানান্তর এর দাবিতে স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২৯ শে আগস্ট দুপুর ১২ টায় কলেজ রোডস্থ ময়লার ভাগাড়টি দ্রুত অপসারণের দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করেন তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দি বাডস্ রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষকবৃন্দ। পরে মিছিল নিয়ে শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় জড়ো হন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে এই ময়লার ভাগাড়টি অপসারণের জন্য। কিন্ত দীর্ঘদিন থেকে এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই এখন আমাদের একটাই দাবি এই ময়লার স্তূপ কে স্থানান্তর করতেই হবে। কারন এই ময়লার দুর্গন্ধের জন্য শারীরিকভাবে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি, সেই সাথে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে, আমাদের শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ প্রাচীন একটি বিদ্যাপিঠ, এখানে বহু শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন, সেই সাথে একটি মাদ্রাসা এবং একটি স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে, যেখানে অসংখ্য ছোট শিশু শিক্ষার্থীও রয়েছে। কিন্ত এখানকার পরিবেশ খুবই দুঃখজনক, এই ময়লার কারনে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ও হচ্ছে। তাই আমরা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ আজ মানববন্ধন ও বিক্ষোভে নেমেছি। আমরা দেশের সরকারের কাছে এটি অপসারণের দ্রুত ব্যাবস্থা নিতে দাবি জানাই।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভা প্রশাসক এডিসি মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তার বলেন, ‘তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে দীর্ঘদিন যাবত ময়লার ভাগাড় রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীসহ যারা আশেপাশে স্থানীয় বাসিন্দা রয়েছেন। স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ অন্যান্য ঝুঁকির মধ্যে সবাই রয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে। এটি অপসারণের জন্য একটি পদক্ষেপও গ্রহন করা হয়েছে পৌরসভা থেকে, আমি যতটুকু জেনেছি। একটি জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, সেটি দখল হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে পৌরসভা কাজটি সমাপ্ত করতে পারেনি। আমি এখানে নতুন দ্বায়িত্ব নিয়েছি। আমাদের শিক্ষার্থী যারা এসেছেন, সকলের বক্তব্য শুনেছি। অবশ্যই এটি একটি যৌক্তিক দাবি। এবং দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহন করার উচিত মর্মে আমিও মনে করি। এটি একটি যুক্তিসঙ্গত দাবি।’
এডিসি মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তার আরো বলেন, ‘আগে নানান কারণে করা হয়নি, এখন আমরা এটি করতে চাই, এবং আমার যে আবেদন থাকবে এলাকাবাসীর প্রতি যে জায়গা থেকে ময়লার ভাগাড়টি সরিয়ে যেখানে নেওয়া হবে, বা দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং অনেকগুলো কাজই সম্পন্ন করা হয়েছে। সেখানে সরানোর জন্য যাতে আমরা এলাকাবাসীর পূর্ণ সহযোগিতা পাই। কেউ যেনো আমরা না বলি, যে আমার এখান থেকে সরে যাক, কোথায় যাবে জানি না।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ময়লার ভাগাড়টি স্থানান্তরের জন্য গত ২০১৭ সালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জেটি রোড এলাকায় ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা দিয়ে নতুন ভাগাড়ের জন্য ২.৪৩ একর জমি ক্রয় করা হয়েছিল। সে সময় জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় ওই এলাকার ফয়েজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি আদালতে মামলা করেন। এ মামলার প্রেক্ষিতে আদালত ২০২৩ সালের ১৩ মে পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।