দীর্ঘক্ষন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছাড়া পেলেন নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী
ডেস্ক রিপোর্টঃ
পরীমনির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছাড়া পেয়েছেন নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার পান্থপথ এলাকা থেকে চয়নিকাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পর রাত ১১টার দিকে তিনি সেখান থেকে বাসার দিকে রওনা হন বলে তার স্বামী নির্মাতা অরুণ চৌধুরী জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “কিছুক্ষণ আগে ও ডিবি অফিস থেকে বের হয়ে গাড়ি নিয়ে বাসার দিকে রওনা করেছে। ও সঙ্গে আমাদের ছেলে অনন্য প্রতীকও আছে।”
এর আগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, “তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যখন ডাকা হবে তখন আসার শর্তে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে।”
জিজ্ঞসাবাদ শেষে ডিবি কার্যালয় থেকে চয়নিকা চৌধুরীকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক ডি এ তায়েব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত পৌনে ১২টার দিকে উনাকে নিরাপদে বাসায় পৌঁছে দিয়েছি। রাস্তায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেজন্য আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। উনাকে আবার হয়তো ডাকা হবে।”
নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীকে নেওয়া হল ডিবি কার্যালয়ে
শুক্রবার বিকালে সময় টিভির সাক্ষাৎকারভিত্তিক একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সন্ধ্যায় ফিরছিলেন চয়নিকা চৌধুরী। সঙ্গে তার ছেলেও ছিলেন। তখনই গাড়িতে তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।
টেলিভিশনের ভিডিওতে দেখা যায়, চয়নিকা চৌধুরীর গাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। পরে নারী পুলিশের একজন সদস্য গাড়ির সামনে চালকের পাশের আসনে থাকা চয়নিকার পাশে উঠে পড়েন। কিছুক্ষণ পর গাড়িটি চলে যায় ডিবি কার্যালয়ের দিকে।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেহেতু পরীমনির সঙ্গে তাকে প্রায়ই দেখা গেছে, সেজন্য আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নিয়ে এসেছি।”
২০০১ সালে ‘শেষ বেলায়’ নাটকের মধ্য দিয়ে টিভি নাটকের নির্মাতা হিসেবে যাত্রা শুরুর পর দুই দশকের ক্যারিয়ারে তিনশ’র বেশি টিভি নাটক নির্মাণ করেছেন চয়নিকা।
পরীমনির হাতে থাকা তিন সিনেমার কী হবে
পরীমনি: নাটকীয় উত্থানের পর...
২০২০ সালে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে নিয়ে নিজের প্রথম সিনেমা ‘বিশ্বসুন্দরী’ নির্মাণ করেন চয়নিকা। সেই সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দুজনের সখ্যতা তৈরি হয়। পরীমনি তাকে ডাকতেন ‘মম’ বলে।
গত জুন মাসে পরীমনি যখন তার বনানীর বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করলেন, তখনও এই চিত্রনায়িকার পাশে দেখা গিয়েছিল তাকে।
গত বুধবার রাতে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পরীমনি এবং তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে আটক করে নিয়ে যায় র্যাব। এরপর অভিযান চলে বনানীতে চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বাড়িতে। সেখান থেকে রাজ এবং তার ব্যবস্থাপক সবুজ আলীকে র্যাব আটক করে।
বৃহস্পতিবার বিকালে উত্তরায় র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পরীমনি ও রাজের বাড়িতে ‘মদ ও মাদকদ্রব্য’ পেয়েছেন তারা। পরীমনির একটি মদের লাইসেন্স পাওয়া গেলেও তার মেয়াদ ছিল না। এছাড়া রাজকে গ্রেপ্তারের সময় কম্পিউটারে 'পার্ন কনটেন্ট' পাওয়া গেছে।
তাদের চারজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার পর বনানী থানায় মাদক আইনে দুটি এবং পর্নগ্রাফি আইনে একটি মামলা করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের আদালতে তোলা হলে মাদক আইনের দুই মামলায় চারজনকে চার দিন করে রিমান্ডে পাঠান বিচারক।
মাস দুয়েক আগে পরীমনিকে নিয়ে ‘অন্তরালে’ নামে একটি ওয়েব সিরিজ নির্মাণে হাত দেন চয়নিকা চৌধুরী। অগাস্টের শেষভাবে চলচ্চিত্রটির শুটিং শুরুর কথা থাকলেও পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।