আমতলীর ইউএনওর নাগরিক সংবর্ধনায় নিজে কাঁদলেন, অন্যদেরকেও কাঁদালেন

 প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫, ০৭:২২ অপরাহ্ন   |   জাতীয়


মাইনুল ইসলাম রাজু, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:

আমতলীর ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের পদোন্নতি জনিত বদলীতে এক নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি নিজে কাঁদলেন উপস্থিত অন্যদেরকেও কাঁদালেন । এ সময় হলরুম জুরে পিনপতন নিরবতার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষে শুধু একে অপরের দিকে তাকিয়ে চোখের পানিতে বিদায় জানিয়েছেন সকলের প্রিয়জন মানবতার ফেরিওয়ালাকে। এরকম এক হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটে সোমবার দুপুর ১২টায়। আমতলী উপজেলা পরিষদের হলরুমে।

সোমবার দুপুরে আমতলীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের পদোন্নতি জনিত বদলীর কারনে উপজেলা পরিষদের হলরুমে এক নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নাগরিক সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য রাখেন বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারন সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুল ইসলাম তালুকদার, আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা, যুগ্ম আহবায়ক তারিকুল ইসলাম টারজন, পৌর বিএনপি ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কবির উদ্দিন ফকির, ইসলামী আন্দোলনের আমতলী উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা ওমর ফারুক জিহাদী, জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশ আমতলী শাখার সাবেক সেক্রেটারী মো. আব্দুল মালেক, সাংবাদিক জাকির হোসেন, ও সাংবাদিক হায়াতুজ্জামান মিরাজ, জসিম উদ্দিন হাওলাদার, রেজাউল করিম, বকুলনেছা মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌসি আকতার, চিলা হাসেম বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, জাতীয়তাবাদী মাধ্যমিক শিক্ষক ফোরামের আহবায়ক মো. দেলোয়ার হোসেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আবদুল্লাহ, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন, মো. মামুন, উপজেলা এতিম খানা সমিতির সভাপতি মাওলানা মোকছেদুল্লাহ, যুবদল নেতা মো. জাকির হোসেন প্রমুখ।

এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় আমতলী পৌরসভা কার্যালয়ের হলরুমে পৌর প্রশাসক ও আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের এক বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। পৌরসভার সচিব মো. রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিদায়ী ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলম। সভায় বক্তব্য রাখেন আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মজিবুল হায়দার, বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারন সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুল ইসলাম তালুকদার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ, হিসাব রক্ষক মো. নাসির উদ্দিন, সাংবাদিক জাকির হোসেন, জসিম উদ্দিন হাওলাদার প্রমুখ। সভায় সচিব রফিকুল ইসলাম কেঁদে ফেলেন এবং তিনি বলেন, আমার ২৬ বছরের চাকুরী জীবনে এরকম একজন ইউএনও সৎ দক্ষ জনবান্ধব পৌর প্রশাসক হতে পারে তা আমার জানা ছিল না। তিনি বলেন পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীদের বছরের পুরানো বকেয়া দেড় কোটি টাকা বেতন ভাতা এক সঙ্গে প্রদান করেছেন। এটা আমাদের হৃদয়ের স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে। ওই দিন সন্ধ্যায় অফিসার্স ক্লাবে এক বিদায়ী সংবর্ধনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিদায়ী ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলম।। সভায় বক্তব্য রাখেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহাম্মাদ জামাল হোসাইন, কৃষি কর্মকর্তা মো. রাসেল, বিআরডিবি কর্মকর্তা মো. মহিদুজ্জামান, সমাজসেবা কর্মকর্তা মানজুরুল হক কাওছারসহ সকল কর্মকর্তা বৃন্দ। পরের দিন সোমবার আমতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের উদ্যোগে এক সংবর্ধনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংবর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মো. আব্দুল আজিজ মিয়া। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিদায়ী ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলম। সভায় বক্তব্য রাখেন সমাজসেবা কর্মকর্তা মানজুরুল হক কাওছার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহাম্মাদ জামাল হোসাইন, বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারন সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুল ইসলাম তালুকদার, বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. গোলাম মস্তফা, সাংবাদিক জাকির হোসেন, জসিম উদ্দিন হাওলাদার ও মো. রেজাউল করিম প্রমুখ।

বিদায়ী ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আমি আমতলী উপজেলা বাসীর নিকট থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি তা দেখে আমি অভিভুত। এ ঋণ আমি কোন দিন শোধ করতে পারবো না। তিনি আরো বলেন, আমি একজন আল্লাহর খাদেম হয়ে শাসক নয় সেবক হয়ে সাধারন মানুষের সেবা দিয়েছি। তিনি আমতলীবাসীর সবার নিকট তার জন্য দোয়া প্রার্থনা করে বলেন, আমি চাই আমতলীর সকল মানুষ সব সময় ভালো থাকবে এটাই আমি প্রত্যাসা করি।

জাতীয় এর আরও খবর: