ঈদে যশোর বেনাপোল স্থলবন্দরে ১০ দিন আমদানী ও রপ্তানী বন্ধ

 প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১১:৫২ অপরাহ্ন   |   জাতীয়


মনা নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দরের কার্যক্রম।


মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক সাজেদুর রহমান।


সাজেদুর রহমান জানান, মুসলমানদের পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) থেকে শনিবার (১৪ জুন) টানা ১০ দিন ভারত থেকে এ বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমসহ কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ১৫ জুন (রবিবার) সকাল থেকে ভারত হতে আমদানি-রপ্তানিসহ কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম সচল হবে। তবে বুধবার (০৪ জুন) বিকেল থেকে বন্ধ হয়ে যাবে দু‘দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি। কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তারা ঈদের ছুটিতে স্বজনদের সাথে ঈদ কাটাতে দেশের বাড়ির পথে রওয়ানা দিবেন।


বন্দর সূত্রে জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে সরকারি ভাবে ১০ তিন ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে। তারপরও বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে। আগামী ১৫ জুন সকাল থেকে পূর্বের ন্যায় এপথে আমদানি-রপ্তানিসহ কাস্টমস হাউজ ও বন্দরে পণ্য খালাস কার্যক্রম চলবে। তবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টযাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।


এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক আদেশে জানিয়েছে, দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য নিরবিচ্ছিন্ন রাখার অভিপ্রায়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ৫-১৪ জুন পর্যন্ত (ঈদের দিন ছাড়া) সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম সীমিত আকারে চলমান রাখার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। ঈদের ছুটিতেও খোলা থাকবে সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনগুলো। তবে এই আদেশ কতটা কার্যকর হবে সে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীসহ ব্যবসায়ীরা। ঈদের আগে পরে ছয় দিন পণ্য পরিবহনের ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে। ব্যবসায়ী ও দোকানের শ্রমিকরা যাবে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে। দোকানপাট বন্ধ থাকবে। তারা এ সময় কোন পণ্য ডেলিভারি নিবে না।


বন্দর ব্যবহারকারী সূত্রে জানা যায়, দেশে চলমান ১২টি স্থলবন্দরের মধ্যে সবচেয়ে বড় আর বেশি রাজস্ব আদায়কারী বেনাপোল স্থলবন্দর। স্থল পথে যে পণ্য আমদানি হয় তার ৯০ শতাংশ হয়ে থাকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৪শ‘ থেকে সাড়ে ৪শ‘ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে থাকে। প্রতিবছর এ বন্দর থেকে সরকারের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আসে। এমনিতেই বেনাপোল বন্দরে পণ্যজট লেগেই আছে। একটানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আমদানি-রপ্তানি চালু হলে সৃষ্টি হবে পণ্য জটের। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে এর প্রভাব পড়বে বলে আশংকা করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।


বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. শামীম হোসেন জানান, ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দরে যাতে কোন ধরনের নাশকতামূলক বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী ও আনসার সদস্যরা দিনে রাতে বন্দর এলাকায় টহল দিবে। পাশাপাশি বেনাপোল পোর্ট থানা কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। ঈদের ছুটির মধ্যে কোন আমদানিকারক পণ্য খালাস নিতে চাইলে খালাস প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।


বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দর এলাকায় যাতে কোনো অপ্রীতিকর ও দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্য বিশেষ নজরদারি নেওয়া হয়েছে।


বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহিম আহমেদ জানান, পবিত্র ঈদ-উল-আযহার ছুটিতে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক থাকবে পাসপোর্টধারীযাত্রীদের যাতায়াত। এ সময় একটু বেশি ভিড় হয়ে থাকে। সে কারণে ইমিগ্রেশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।

জাতীয় এর আরও খবর: