ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে নৌকায় ভাসমান জুয়ার আসর।

মুহাইমিনুল (হৃদয়)ঃ
যে সময়ে সারা দেশ ব্যাপি ক্যাসিনো ও জুয়া বিরোধি চলছে শুদ্বি অভিযান, ঠিক সে সময়ে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে অভিনব কায়দায় জুয়ার আসর, শতশত লোকের সমাগমে লাখ লাখ টাকার জুয়া চললেও জানে না প্রশাসন।যমুনা নদীতে নৌকা ভাসিয়ে সেখানে চলছে ভাসমান জুয়ার আসর।অনেকটা জাকজমক ভাবেই দিনের পর দিন ভাসমান নৌকায় চালানো হচ্ছে এ অবৈধ কার্যক্রম। ঢাকাসহ সারাদেশের জুয়াড়ীরা নিরাপদ আস্তানা ভেবে এই যমুনা নদীতে ভাসমান জুয়ার আসরে আসছে।শুধু জুয়াই নয় সেখানে অবাদে চলছে মাদক সেবন ও ব্যবসা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভূঞাপুর উপজেলার কুঠিবয়ড়া হতে গাবসারার রামপুর পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে জুয়াড়িদের নিরাপদ স্থানে ভাসমান জুয়া খেলা চলছে। ছোট ছোট ইঞ্জিন চালিত নৌকাযোগে জুয়াড়িরা মধ্যে নদীতে যাচ্ছে। সেখানে আগে থেকে থাকা জুয়ার নৌকা অপেক্ষা করছে তাদের নিতে। এরপর নিরাপদ স্থানে নৌকা ভাসিয়ে দিয়ে তাতেই চলে জুয়া খেলা। আর এই খেলা নজরদারী করতে জুয়াড় বোর্ড পরিচালনাকারীরা তাদের নিজস্ব লোকবল গোবিন্দাসী ঘাট থেকে গোপালপুর উপজেলার নলীন পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে নিয়োজিত রেখেছে খোঁজ খবর রাখার জন্য। দূরের ওই ভাসমান নৌকাটি জুয়া খেলার জন্যই তৈরি করেছেন উপজেলার কুঠিবয়ড়া গ্রামের মামুন।আর তাতে জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করছে জুয়ার হামলা মামলার প্রধান আসামি জামিনে থাকা ফজল মন্ডল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, আয়োজকরা প্রভাবশালী। সেইসাথে প্রশাসন ও ক্ষমতাবানদের সাথে তাদের যোগসাজশ থাকায় তাদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাননা তারা।প্রতিনিয়তই দিনে দুপুরে যমুনা নদীতে ভাসমান ওই নৌকায় চলছে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা আর মাদক সেবন।
প্রসঙ্গত,চলতি বছরের ২ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী যমুনা ঘাট সংলগ্ন কাঁশবনে জুয়ার আসরের সচিত্র সংবাদ সংগ্রহে গেলে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায় জুয়াড়িরা। এতে চার সাংবাদিক সহ ছয় জন আহত হয়। ওই রাতেই ডিবিসি নিউজের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি সোহেল তালুকদার বাদী হয়ে জুয়াড়ু প্রধান ফজল মন্ডলকে প্রধান আসামী করে ৮জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত শতাধিক জুয়াড়ুর বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ভূঞাপুর থানা পুলিশ ফজল মন্ডলকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ৪০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোপত্র জমা দিয়েছে।
গোবিন্দাসী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল মান্নান জানান, যমুনা নদীর বঙ্গবন্ধু সেতু হতে গোপালপুরের নলীন পর্যন্ত নৌ পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করে। এরমধ্যে কোথাও নদীতে ভাসমান নৌকায় জুয়া খেলার কোন খবর নেই। তবে থানার অধীন বিভিন্ন নদীর শাখা-প্রশাখা বা খালগুলোতে হয়তবা জুয়া খেলতে পারে।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রাশিদুল ইসলাম জানান, যমুনা নদীতে ভাসমান নৌকায় জুয়া খেলার কোন তথ্য নেই। তবে সিরাজগঞ্জের সীমনায় জুয়ার খেলার খবর পাওয়ার পর সেখানকার থানা পুলিশের মাধ্যমে সেটার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।