বেনাপোলে করোনার মাঝেও ৬৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়।

 প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২০, ০১:৩০ পূর্বাহ্ন   |   রাজনীতি


মনা বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধিঃ

বেনাপোলে করোনার মাঝেও ৬৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়

Share ShareTweetঅ+অ-

দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল আন্তর্জাতিক কাস্টম-ইমিগ্রেশন হয়ে ভারতে ভ্রমণকারী দেশি-বিদেশি পাসপোর্টযাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর বাবদ ২০১৯-২০ অর্থবছর সরকারের ৬৭ কোটি ৪৭ লাখ ৯৩ হাজার ৪৯৪ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ সময় ১২ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৩ জন যাত্রী ভারতে প্রবেশ করে।


আদায়কৃত রাজস্বের মধ্যে বেনাপোল সোনালী ব্যাংক আদায় করেছে ৪৭ কোটি ৪৬ লাখ ২২ হাজার টাকা। বাকি অর্থ আদায় হয়েছে দেশের অন্যান্য সরকারি ব্যাংকের শাখা থেকে। তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে গত মার্চ মাসের শেষের দিক থেকে যাত্রীর যাতায়াত তার আগের অর্থবছরের চেয়ে কমেছে বলে জানা গেছে। বেনাপোল সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার রকিবুল ইসলাম যাত্রী পরিসংখ্যান ও রাজস্ব আদায়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভারতগামী যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর আদায়ে কাজ করে থাকে বেনাপোল সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যাত্রী প্রতি সরকার নির্ধারিত ৫০০ টাকা ভ্রমণকর এবং বন্দরের ট্যাক্স বাবদ ৪২ টাকা ৮৫ পয়সা আদায় করে থাকে। সেসব যাত্রী ভারতে প্রবেশ করেছে, তাদের ৯০ শতাংশ বাংলাদেশি এবং ১০ শতাংশ ভারতসহ অন্যান্য দেশের নাগরিক রয়েছে।


বন্দর ও ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সাল থেকে বৈধভাবে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পাসপোর্টে ভারত যাতায়াত শুরু হয়। বেনাপোল থেকে কলকাতা শহরের দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। বেনাপোল থেকে রওনা দিয়ে ট্রেন ও বাসযোগে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছানো যায় কলকাতা শহরে। যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এ পথে চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণপিপাসু মানুষ যাতায়াতে প্রথম থেকে স্বাচ্ছন্দ্য করে থাকে। বর্তমানে বেনাপোল স্থলপথের পাশাপাশি রেলপথেও যাত্রীরা ভারত যাতায়াত করে থাকে।


করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারত সরকার ১৩ মার্চ বিকেল থেকে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশের পাসপোর্টযাত্রীদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি ও ভিসা স্থগিতের পর ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস ও খুলনা-কলকাতা বন্ধন ট্রেন সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর ২২ মার্চ ভারতে জনতার কারফিউ জারি করা হয়। ২৩ মার্চ থেকে দফায় দফায় লকডাউন বাড়িয়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময়ে যেসব বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারতে ঢুকে আছে, তারা ইচ্ছা করলে বেরিয়ে যেতে পারবে। আর ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রী যারা বাংলাদেশ আছে তারা ফিরে এলে তাদের গ্রহণ করা হবে। নতুন করে কোনো পাসপোর্টধারী যাত্রী প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। এরপর পেট্রাপোল বন্দর এলাকা দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াতের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে ২৭ মার্চ রাত থেকে। সেই থেকে এখনো এ পথে বাংলাদেশিদের ভারত যাওয়া বন্ধ রয়েছে। তবে কূটনীতিক, অফিশিয়াল, জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রকল্পের ভিসাধারীদের যাতায়াত সচল রয়েছে বলে ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে প্রতিবছর এত বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হলেও এখানে যাত্রীসেবা বাড়েনি। অবকাঠামো উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এ ছাড়া সেবার নামে বন্দরের ট্যাক্স আদায় করা হলেও বন্দরে তেমন কোনো সেবা নেই যাত্রীদের। করোনাভাইরাসের আগে ইমিগ্রেশনে যাত্রী ছাউনি না থাকায় যাত্রীদের দীর্ঘ সময় রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া রয়েছে যাত্রী টার্মিনাল ও চেকপোস্টের বিভিন্ন নামধারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতারকদের দৌরাত্ম্য।

রাজনীতি এর আরও খবর: