গ্রামবাসীর ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে মসজিদের মাইকে মোয়াজ্জেম ঘোষণা।

 প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২০, ০৭:২৫ অপরাহ্ন   |   রংপুর


মোঃ আবু তাহের নীলফামারী জেলা ব্যুরো প্রধানঃ

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ঈদগাহ ময়দানে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণকে কেন্দ্র করে পুলিশ-গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাটখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে ।


আহতরা হলেন, ওসি (তদন্ত) মোঃ মফিজুল ইসলাম (৫০), এস আই আব্দুল ওহাব  (৩৫) গ্রামবাসির মধ্যে তহমিনা বেগম(৩৫)


এ ঘটনায় উপজেলা হাসপাতালে আহত ওসি (তদন্ত) ও এক দম্পত্তিকে ভর্তি করা হয়েছে।পরে ওসি (তদন্ত) মোঃ মফিজুল হককে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।


এলাকাবাসী জানায়, গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চারালকাটা নদী খননে গ্রামের ঈদগাহ ময়দানটি ভাঙ্গনের কবলে পড়তে পাড়ে বর্শার সময়। ফলে গ্রামবাসী স্বেচ্ছায় ঈদগাহ ময়দান রক্ষার্থে বালির বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে। এ অবস্থায় ওই গ্রামের মৃত ঈসা উদ্দিনের ছেলে তছলিম উদ্দিন ঈদগাহ ময়দানের জায়গা নিজের দাবি করে গ্রামবাসীকে বালির বাঁধ নির্মাণে বাধা দিলে ২১ এপ্রিল গ্রামের আলমগীর হোসেনসহ চারজনকে মারধর করা হয়। আহতরা হাসপাতালে ভর্তি হয়।


এ ঘটনার পরদিন ২২ এপ্রিল তছলিম উদ্দিনসহ তার সাথীদের  বিরুদ্ধে আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ৭)। অপর দিকে তছলিম উদ্দিনও পাল্টা মামলা দায়ের করেন।


এলাকাবাসীর অভিযোগ,তারা সোমবার সকালে যখন পুনরায় ঈদগাহ ময়দানের সামনে স্বেচ্ছায় বালির বাধের কাজ করছিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ঘটনাস্থলে এসেই তাদেরকে বাধা দিয়ে বলেন উভয় পক্ষ থানায় এসে কাগজ দেখান পরে কাজে যাবেন। প্রতিবাদ করতে গেলে গ্রামের ইলিয়াছ হোসেনকে (৪৫)  আটক করেন ওই তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল ওহাব। স্বামীকে উদ্ধার করতে ছুটে যায়  ইলিয়াছ হোসেনের স্ত্রী তহমিনা বেগম (৩৫) এক পর্যায়ে ইলিয়াছ হোসেন ও তার স্ত্রী পানিতে পরে যায়। গুজব উঠে এসআই লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে , গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ওই এসআইকে ধাওয়া করলে তিনি দৌড়ে পালাতে থাকেন।


 খবর পেয়ে কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মফিজুল হকের নেতৃত্বে এক দল পুলিশ যায়। গ্রামবাসীর ওপর পুলিশ  লাঠিচার্জ করে মসজিদের মাইকে মোয়াজ্জেম ঘোষণা দিলে, গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। 


তবে মোয়াজ্জেমকে জিগ্যেস করলে বলে আমি সাদা মেম্বারের হুকুমে ঘোষণা দিয়েছি। এ অবস্থায় পুলিশের দলটি একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়,


 এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ মোঃ আবুল কালাম বারী (পাইলট)। তার সহায়তায় উপজেলা হাসপাতাল হতে অ্যাম্বুলেন্স এনে আহত ওসি (তদন্ত) ও আহত দম্পতিকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। তবে  আহত ওসি (তদন্ত)কে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।


এ সময় গ্রামবাসী দোষী পুলিশ সদস্যদের বিচার ও অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ করতে থাকে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পাল। তিনি তদন্তের মাধ্যমে দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

রংপুর এর আরও খবর: