বুড়িচংয়ে বিল্লাল হত্যায় সন্দেহভাজন কিশোর আটক।

 প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২০, ০১:০১ অপরাহ্ন   |   চট্টগ্রাম


বুড়িচং ( কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ   

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের নারায়নসার গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে মোঃ বিল্লাল হোসেন(২২)এর লাশ গত ২৬শে মার্চ বৃহস্পতিবার   সন্ধ্যায়  কালাকচুয়ার কাজীম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে থেকে  উদ্ধার করে থানা পুলিশ।     


বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাম্মেল হক ( পিপিএম)  জানান বিল্লাল হত্যায় সন্দহে  ফারুক (জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী ১৩ ) নামক একজনকে  আটক করা হয়েছে। ৩০২,২০১, ৩৪ দ্বারায়  মামলা আসামিকে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত করছে এস আই নন্দন চন্দ্র সরকার।


এদিকে মৃত বিল্লালের বাবা সবুজ মিয়ার সাথে কথা বলার সময় তিনি বলেন আমার ভাগিনা ফারুক আমার ছেলেকে সন্ধ্যার সময়  বাড়ি থেকে  ডেকে দিয়ে নিয়ে যায়। রাত ৮ টার সময় আমার ছেলেকে ভাত খাওয়ার জন্য আমি ফোন করি। তখন আমার ফোন রিসিভ করে পুলিশ। পুলিশ ফোনে আমাকে জানায় যে আমার ছেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। আমরা সবাই সেখানে  হাজির হয়ে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসি। কিছু সময়ের পর আমরা বুঝতে পারলাম যে এটা সড়ক দুর্ঘটনা নয়। আমার ছেলেকে খুন করেছে। সে মূহুর্তে আমার বোন আমাদের বাড়িতে আসলে আমরা তাকে আটক করে আমার বাগিনা ফারুক কে নিয়ে আসতে বলি। ফারুক আসলে আমরা পুলিশকে ফোন করে আমার ছেলের লাশ ও ফারুককে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।                                                       


ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায় যে,গত বৃহস্পতিবার ২৬ শে মার্চ বিকালে ফারুক(১৩), নাজমুল (১৪), বিল্লাল ( মামাত-ফুফাত ভাই) আড্ডার উদ্দেশ্যে বের হয়। ফারুক সদর উপজেলার পার্শ্ববর্তী  ২ নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মৃত এমরান হোসেনের ছেলে।  সন্ধ্যার পূর্বে ফারুক ও নাজমুল  একসাথে বাড়িতে চলে আসে। কারন সে মুহূর্তে বিল্লালের সাথে বিল্লালে বন্ধু রেজাউল( ২১) এসে ভিবিন্ন বিষয়াদি নিয়ে আড্ডা শুরু করছিল। বাড়ি থেকে বের হওয়ার ১৫ - ২০ মিনিটের মধ্যে সে বাড়িতে চলে আসে এমনটা জানালেন তার মা মোসাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস।  ফারুক সন্ধ্যার পূর্বে বাড়িতে চলে আসলে তার মা তাকে দোকানে খরচের জন্য পাঠায়। এবং সে খরচ নিয়ে বাড়িতে সাথে সাথে চলে আসে।   


 আনুমানিক রাত ১০ টার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম  ফেইসবুকে 'বিল্লাল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত' এমন একটি পোস্ট ভাইরাল হয়। পরে তা দেখে ফারুকের মা ফারুক ও তার বোনকে নিয়ে নিহত বিল্লালের বাড়িতে যান। ফারুকের মায়ের ভাষ্যমতে  এমতাবস্থায় হঠাৎ মৃত বিল্লালের নানা মোসা মিয়া ফারুকের মা কে বলে সামাজিক ভাবে বসে তারা এ বিষয় সমাধান করবে। ফারুকের মা বলে কি বিষয়? তখন মৃত বিল্লালের নানা বল যে ফারুক - বিল্লাল কে হত্যা করেছে। তাই আমরা গ্রামের সবাই বসে পুলিশ কেইস ছাড়া বিষয় টা সমাধান করব। মোসাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি বলেন উঠেন আমার ছেলে কখনো তা করতে পারে না। কারন সন্ধ্যার পর থেকে আমার ছেলে আমাদের ঘরেই ছিল। এখানে সঠিক হত্যাকারী কে আমি জানতে চাই। মৃত্যুর সঠিক কারন তদন্ত সাপেক্ষে জানতে চাই। আমার ছেলেকে ফাঁসানো হবে কেন? এই নিয়ে  বাকবিতন্ডা চলছিল তাদের মধ্যে। 


ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আরো জানা যায়  ১০ টার সময় ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কর পাশে ক্ষত বিক্ষত লাশ দেখে স্হানীয় লোকজন তাকে চিনতে পেরে তার বাড়িতে খবর দেয়। লোকজন বলাবলি করছিল যে এটা সড়ক দুর্ঘটনা নয়। কেউ হয় হয়তো হত্যা করে লাশ ফেলে চলে গেছে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেবার জন্য । সড়ক দূর্ঘটনার খবর পেয়ে ময়নামতি হাউওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে । তারা নিহতের আঘাত দেখে ধারনা করে এটা সড়ক দূর্ঘটনা নয় তাকে কেউ মেরে ফেলে গেছে।  পরে নিহতের পরিবার তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়।   


আনুমানিক রাত ১২ঃ৩০ মিনিট। নিহত বিল্লালের নানা  বুড়িচং থানায় ফোন করেন। তখন দেবপুর ফাঁড়ির এ এস আই মোঃ জহির ঘটনা স্হলে এসে সুরতহাল তৈরী করে লাশ ফাঁড়িতে  নিয়ে যায়। এবং ফারুক সহ মোট তিন জনকে জিজ্ঞেসা করার জন্য সন্দেহ ভাজেন ভাবে ফাঁড়িতে  নিয়ে যায়।           

আটককৃত আসামী ফারুক ২০০৭ সালে জন্ম সে অনুযায়ী তার বর্তমান বয়স ১২/১৩ হবে। তাই এলাকাবাসী সহ সকলের দাবী, বিল্লালের প্রকৃত হত্যাকারীকে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন । আর ফারুক কে নিঃস্বর্ত মুক্তি দাবি করেন।

চট্টগ্রাম এর আরও খবর: