এবার তুরস্ককে আর্মেনিয়ার ১৫ লাখ জনগণকে গণহত্যার অভিযোগ দিল জো বাইডেন।
স্টাফ রিপোর্টার আউয়াল ফকিরঃ
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান কূটনৈতিক টানাপোড়েন দূর করতে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলবেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। মঙ্গলবার তুরস্কের টেলিভিশন চ্যানেল টিআরটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। খবর আনাদোলুর।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, নানা বিষয় নিয়ে তুরস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। উত্তেজনা প্রশমনে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এরদোগান বলেন, বৈঠকে আমরা জিজ্ঞাসা করবো, সম্পর্কের ক্ষেত্রে কেন তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্র এত উত্তেজনাপূর্ণ সময় পার করছে। বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ১৪ জুন অনুষ্ঠেয় সম্মেলনের সাইডলাইনে এরদোগান-বাইডেন বৈঠকে মিলিত হবেন। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি বারাক ওবামা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করেছি। তাদের কারও সঙ্গেই সম্পর্ক এত উত্তেজনাপূর্ণ ছিল না।
অটোমান বাহিনীর হাতে ১৯১৫ সালে আর্মেনিয়ার ১৫ লাখ মানুষের মৃত্যুকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেন বাইডেন। এতে ন্যাটোর দুই সদস্য দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। তিনি বাইডেনের সমালোচনা করে বলেন, ইতিহাসবিদ এবং আইনজ্ঞদের এ বিষয় নিয়ে কাজ করা উচিত, কোনো রাজনীতিকের নয়।
এর পেছনে বাইডেনের কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা জানতে চাইলে এরদোগান বলেন, ‘তুরস্ক এ ধরনের বিষয়ের সঙ্গে অভ্যস্ত।’ তবে এ মন্তব্য সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, তুরস্ককে এভাবে যারা কোনঠাসা করার চেষ্টা করবে তারা গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুকে হারাবে।
তুরস্ক ন্যাটোর শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য সহযোগী’, যোগ করেন তিনি। সিরিয়ায় ওয়াইজিপি/পিকেকে যাদের তুরস্ক সন্ত্রাসী হিসেবে দেখে তাদের সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এটা তুরস্কের পছন্দ নয়। এরদোগান বলেন, আমরা পিকেকে এবং ওয়াইজিপি/পিওয়াইডি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সব তথ্য দিয়েছি। কিন্তু তারা দেখেও না দেখার ভান করে বসে আছে।
যদি তুমি মিত্র হও তাহলে আমাদের সঙ্গে দাঁড়াও, শত্রুদের সঙ্গে নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, তারা সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে’, যোগ করে রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। ‘শক্তিশালী তুরস্ক’ ছাড়া ন্যাটো শক্তিশালী থাকবে না বলে উল্লেখ করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কিনেছে তুরস্ক। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এরমধ্যে অটোমান বাহিনীর হাতে ১৯১৫ সালে আর্মেনিয়ার ১৫ লাখ মানুষের মৃত্যুকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ ফলে সম্পর্ক আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে যায়। এবার সে সম্পর্ক ঝালাই করে নেওয়ার উদ্যোগ নিতে চাইছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। তিনি দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।