ভাবড়াশুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রিফাতুল আলম মুছা তার নিজ ইউনিয়নবাসীর উদ্দেশ্যে কিছু কথা
নিজস্ব প্রতিনিধি,
সম্মানিত ভাবড়াশুর ইউনিয়নবাসী, আসসালামু আলাইকুম। অন্য ধর্মাবলম্বী সবাইকে আদাব ও শুভেচ্ছা।
আমি আপনাদের স্নেহের সন্তান মুছা। ২০১৬ সালের ৭ই মে অনুষ্ঠিত ভাবড়াশুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমাকে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেয়ার জন্য আমি আপনাদের নিকট চিরকৃতজ্ঞ।
চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমি ভাবড়াশুর ইউনিয়নবাসীর সার্বিক উন্নয়নে একনিষ্ঠ ভাবে কাজ করে আসছি। একের পর এক বিভিন্ন প্রকল্পে অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে রাস্তা-ঘাটসমূহের উন্নয়ন করা হয়েছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের জন্য নির্মান করা হয়েছে ছোট বড় আরসিসি কালভার্ট ও ব্রীজ, মাটির নিজ দিয়ে UPVC পাইপ বসানো হয়েছে, খাল খনন করা হয়েছে। ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে ঘাটলা, পাবলিক টয়লেট। স্থাপন করা হয়েছে হস্তচালিত গভীর নলকূপ। ভাবড়াশুর ইউনিয়নে এ সকল ধারাবাহিক উন্নয়ন কর্মকান্ড আজ শুধুমাত্র ইউনিয়নে প্রসংশিত নয়, উপজেলা ব্যাপিও স্বীকৃত হয়েছে।
বিগত নির্বাচনে আমি বলেছিলাম “ স্বপ্ন, সম্ভবনা ও পরিবর্তনের অঙ্গীকার করে ছিলাম”। আপনারা আস্থা রেখে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন এই ইউনিয়নটিকে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে। আমি এক মুহুর্তের জন্যেও সে দায়িত্ব ভুলিনি, নিজের পরিবার-পরিজন সবকিছুর উর্দ্ধে রেখেছি ইউনিয়নের উন্নয়ন তথা ইউনিয়নবাসীর সেবা। বিগত ৫ বছরে সুখে-দু:খে-দুর্যোগে বা ইউনিয়ন বাসীর যে কোন বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়েছি সর্বদাই। বিশেষ করে, করোনা কালীন সময়ে আমি নিজের জীবনের কথা না ভেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে থেকেছি। আমার সামর্থ্য অনুসারে চেস্টা করেছি মানুষের পাশে থাকতে, তাদেরকে সহযোগিতা করতে। আপনাদের সেবা করতে এসে আমি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছি।
আমি কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করিনি। ইউনিয়নবাসীর সকল উন্নয়ন কাজের গুনগতমান নিশ্চিতের বিষয়েও আমি কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছি, যা আপনারা প্রত্যক্ষভাবে দেখেছেন। আমরা গত ৫ বছরে এলজিইডি, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় (ত্রান শাখা), জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, বিআরডিবি, বিএডিসি, স্বাস্হ্য প্রকৌশল, জন স্বাস্হ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত হয়েছি এবং সেই বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমান প্রায় ২৭ কোটি টাকা। যে টাকায় ইউনিয়নবাসীর জন্য সকল প্রধান প্রধান রাস্তায় কার্পেটিং, ইট ও মাটির কাজ হয়েছে, স্কুলে নতুন নতুন ভবন হয়েছে, বিদ্যুৎ, মসজিদ ও মন্দিরের উন্নয়ন, হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকের সংস্কার, ছোট ও বড় ব্রীজ, কালভার্টসহ অবকাঠামো উন্নয়ন করেছি।
আমি সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রাণপ্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। যিনি ২০১৬ সালে ভাবড়াশুর ইউনিয়ন নির্বাচনে আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। পাশাপাশি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি মুকসুদপুর কাশিয়ানী উন্নয়নের রুপকার, আমার অভিভাবক মাননীয় সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী জনাব মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি মহোদয় ও ভাবড়াশুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বার বার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান, মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামীলীগের বিল্পবী সাধারন সম্পাদক মো: রবিউল আলম সিকদার মহোদয়ের প্রতি। ভাবড়াশুর ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়নে তাঁদের বিশেষ অবদান রয়েছে। তাঁদের সহযোগিতা ব্যতীত স্বল্প সময়ে এতো উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা কোনভাবেই সম্ভব ছিল না।
আমার নির্বাচনী ইশতেহার এর প্রায় শতভাগ প্রতিশ্রুতি আমি বিগত ৫ বছরে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছি। যার মধ্যে রাস্তা ঘাট, ব্রীজ, অবকাঠামো উন্নয়ন, সোলার সড়ক বাতি, শতভাগ বিদ্যুতায়ন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ভাবড়াশুর ইউনিয়নবাসীর ধারাবাহিক উন্নয়ন, জননিরাপত্তা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধি করণের লক্ষ্যে সুপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করেছি।
#বৈশ্বিকমহামারী করোনাকালীন সময়ে লকডাউন চলাকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদার অব হিউম্যানিটি জননেত্রী শেখ হাসিনার ও মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব মুহাম্মদ ফারুক খান (এম.পি) মানবিক সহায়তা আমি নিজে সার্বক্ষণিক মাঠে থেকে প্রত্যেক শ্রেনী পেশার কর্মহীন, বিপদগ্রস্থ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিয়েছি। পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ১ হাজার পরিবারে ৩ দফায় প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদান করেছি। পাশাপাশি, লকডাউনে অর্থনৈতিক সংকটের শিকার হওয়া মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষের জন্য সহায়তা প্রত্যাশী পরিবারের পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রেখে আমি নিজে তাদের বাড়িতে প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। উক্ত সময়ে আমি আওয়ামী লীগ, ইউপি সদস্য, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও সহযোগী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে অসহায় মানুষগুলোর পাশে থেকেছি। এছাড়া, জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহার বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতাসমূহ সঠিক ভাবে বন্টনের চেষ্টা করেছি।
ভাবড়াশুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে সোলার সড়ক বাতি স্থাপন করে দীর্ঘদিনের অবহেলিত অন্ধকারাচ্ছন্ন ভাবড়াশুর ইউনিয়নবাসীরকে আলোকিত করেছি। এতে রিনিউয়েবল এনার্জি ব্যবহারের মাধ্যমে একদিকে জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়েছে, অপরদিকে রাত্রীকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।
বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে আজ শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন ক্লাস, ডিজিটাল লাইব্রেরীর মাধ্যমে পড়াশুনা তথা ইন্টারনেট এর সহযোগিতায় শিক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেই লক্ষ্যে, ইউনিয়ন পরিষদে “ফারুক খান ফ্রি ওয়াইফাই জোন” চালু করেছি, যাতে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে তাদের অনলাইন পড়াশুনা করতে পারে।
আমি ভাবড়াশুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন আদর্শিক কর্মী হিসেবে জনগনের বিপদ-আপদ-প্রয়োজন, সুখে ও দু:খে সার্বক্ষণিকভাবে মানুষের পাশে আছি।
বৈশ্বিক করোনা মোকাবেলায় এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের নাগরিক সেবা সবাইকে পৌঁছে দিতে প্রাণপ্রিয় নেত্রীর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি।
বিগত ৫ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে আমি হয়ত আপনাদের প্রত্যাশার শতভাগ পূরণ করতে পারিনি, সেজন্য আমি আপনাদের কাছে বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি৷ তবে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি আপনাদের কল্যাণে নিজেকে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রাখার৷
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। মহান আল্লাহ যেন আমাকে পুনরায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার তৌফিক দান করেন। আমিন