মুকসুদপুরে খাল পুনঃ খননের নামে চলছে সরকারের কোটি টাকা হরিলুট।

 প্রকাশ: ২৮ মে ২০২১, ১১:৫২ অপরাহ্ন   |   মুকসুদপুর


শহিদুল ইসলাম শহিদ ঃ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর  উপজেলার ফসলি জমিগুলোকে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে জমিতে পানির সেচের ব্যবস্থা করার জন্য এলাকার ভরাট হয়ে যাওয়া খালগুলোকে পুনঃ খননের উদ্যোগ গ্রহন করেছে বর্তমান জনকল্যাণমূখি সরকার।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জনের লক্ষে কৃষি খাতে ব্যাপক উনয়নমূখি কর্মসূচী গ্রহন করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মুকসুদপুর উপজেলায় ভরাট হয়ে যাওয়া বিভিন্ন নদী ও খাল পুনঃ খনন কর্মসূচী গ্রহন করায় এলাকার কৃষকদের মাঝে আনন্দের মহা উৎস দেখা দেয়।দীর্ঘদিন যাবৎ খালগুলোতে পানি না থাকায় এই অঞ্চলের কৃষকরা পানির অভাবে ভাল ফসল উৎপাদন করতে পারেনি। নদী ও খাল পুনঃ খননের মহা উদ্যোগকে এলাকার প্রকৃত কৃষকরা জাতির জনক নঙ্গবন্ধু'র তনয়া কৃষক বান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জানা গেছে,মুকসুদপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আটাডাংগা বাওর হতে নাওরা কদমপুর হয়ে মুকসুদপুর বাওর পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার খাল খননের কার্যত্রুম সম্পূন্ন হয়েছে। প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী আনুমানিক

১৭ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৭ফুট গভীরতা করে এতে  ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬৭৮ টাকা ব্যয়ের বরাদ্দ ধরে খাল খননের প্রকল্প তৈরী করেছে উদ্ধর্তন কর্মকর্তাগণ।

মশিউর রহমান মিয়া সভাপতি,কামরুল ফকির সহ সভাপতি,শাহনেওয়াজ সাধারন সম্পাদক, আমিনুর মুন্সী কোষাধ্যক্ষ  ও নুর হাসান সরদার সদস্য সহ ১২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি মুকসুদপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের সুরপী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিঃ মিঃনামে  প্রতিষ্ঠান এই খাল খননের দায়িত্ব পায়। একই ইউনিয়নের অর্জুনদাহ গ্রামের এসকেভেটর ডোজার (ভেকু) এর মালিক এনায়েত মুন্সীর সাথে সভাপতি মশিউর রহমান মিয়া খননের চুক্তি করে। প্রতি কিলোমিটার খাল পুনঃ খননে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা হতে  ৬ লক্ষ টাকা মোট ৩ কিলোমিটার খাল খনন সাড়ে ১৬ লক্ষ হতে ১৮ লক্ষ টাকার মাধ্যমে খাল পুনঃ খনন কাজ সম্পূন্ন করেছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। এব্যাপারে কমিটির সদস্য নুর হাসান সরদারের সাথে মোবাইল ফোনে আলাপকালে তিনি জানান - ৩ কিলোমিটার খাল অর্জুনদা গ্রামের  ভেকুর মালিক এনায়েত মুন্সী ১৮/ ১৯ লক্ষ টাকার চুক্তির বিনিময়ে খননের কাজ সম্পূন্ন করেছে। 

অপর এক সদস্য মোঃ বাচ্চু শেকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান কমিটির কোন সদস্যদের সাথে আলাপ আলোচনা না করে সমিতির সভাপতি মোঃ মশিউর রহমান মিয়া একক ভাবে খাল খননের কার্যত্রুম পরিচালনা করেছেন। তিনি আরোও জানান যেভাবে খাল খননের নিয়ম রয়েছে সেভাবে খনন না করে খালের দুই পাড়ের বকচারের মাটি এসকেভেটর ডোজার দিয়ে ছালাইয়া খালের মধ্যে ফেলিয়ে তলার কাদা মাটি সহ দুই পাড়ে ফেলা হয়েছে। যেখানে সিডিউলে ৭ ফুট গভীর করার নিয়ম থাকলেও নামমাত্র গভীর করেছে। কৃষকের জমিতে পানির সেচের ব্যবস্থার করার জন্য সরকার ভরাট খাল পুনঃ খননের উদ্যোগ গ্রহন করলেও খাল পুনঃ খননে যেভাবে অনিয়ম হয়েছে তাতে এই খননে কৃষকের কোন উপকার আসবেনা বলে তিনি জানিয়েছেন। কদমপুর সুরপী সাব প্রজেক্ট ( সিআইডি -৭২০৪৫) এর মাধ্যমে সরকার সেচ ব্যবস্থায় এলাকায়র গরীব কৃষকদের উন্নতি সহ অধীক ফসল ফলানোর লক্ষে মুকসুদপুর খাল পুনঃ খননে ব্যবস্থা করেছে। খাল পুনঃ খনন কাজের বিরুদ্ধে দূনীর্তির অভিযোগ করে গোবিন্দপুর ইউনিয়নের কদমপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাসার মিয়া ( বাসু মিয়া) গোপালগঞ্জ এল,জি,ইডি এর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। প্রকল্প পরিচালক, ক্ষুদ্র পানি সম্পদ ( জাইকা) এল,জি,ইডি ঢাকা, প্রকল্প পরিচালক, এল,জি,ইডি গোপালগঞ্জ, উপজেলা প্রকৌশলী, এল,জি,ইডি মুকসুদপুর বরাবর অনুলিপি প্রদান করেছেন। 

এছাড়া খাল পুনঃ খনন অনিয়মের কারনে এলাকার ফসলি জমির চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগে পাওয়া গেছে। খাল খনন করে মাটি খালের দুই পাড়ে ফেলার নিয়ম থাকলেও তারা  বিশৃঙ্খলা ভাবে ফসলি জমিতে মাটি ফেলায় চাষীদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। গত ৬ মে ২০২১ তারিখে ক্ষতিগ্রস্ত চাষী কদমপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ফকির সহ কয়েকজন চাষী ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের ক্ষতিপুরন দাবী করে মুকসুদপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

স্থানীয় জনগণের প্রশ্ন গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আটাডাংগা বাওর হতে নাওরা কদমপুর হয়ে মুকসুদপুর বাওর পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার খাল পুনঃ খনন মাত্র প্রায় ১৮ লক্ষ টাকায় সম্পূন্ন হয়েছে। বাকী ১ কোটি ৪৬ হাজার ৬৭৮ টাকা  সরকারের বরাদ্দকৃত টাকা এখন কি হবে। মুকসুদপুর উপজেলায় খাল খনন প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা হরিলুট হচ্ছে বলে এলাকার জনগণ জানান। এলাকার জনগণের অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে সরেজমিন গেলে ঘটনার সত্যতা খুজে পেয়েছে। সরকারের কিছু অসাধু কর্মকর্তা প্রকল্প / প্রজেক্টের নাম দিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা প্রতারনার মাধ্যমে আত্মসাৎ করছে বলে স্থানীয় জনগণ জানান। খাল পুনঃ খননের নামে অর্থ আত্মসাৎ ও দূনীর্তিবাজ অসাধু টিকাদার প্রতিষ্টানের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করছেন এলাকার ক্ষতিগ্রস্হ কৃষকেরা।

মুকসুদপুর এর আরও খবর: