নাটোরের বড়াইগ্রামে বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলেন ইউপি সদস্য সন্তান।

 প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২০, ০৯:১৭ অপরাহ্ন   |   রাজশাহী



জাহিদ হাসান, নাটোর 

দু:খ, কষ্টে ছয় ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করলেও আজ সেই ছেলেদের ঘরেই ভাত জুটছে না ৯০ বছরের বৃদ্ধা বুন্জনী বেগমের। দু-বেলা, দু-মুঠো ভাতের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে বুন্জনী বেগম। ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা হলেন গড়মাটি গ্রামের মৃত হাজিরউদ্দিন প্রামাণিক এর স্ত্রী বুন্জনী।


এমনটা ঘটনা ঘটেছে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গড়মাটি গ্রামে।


মাকে দু’ মুঠো খেতে দিলে নাকি খাবার ফুরিয়ে যাবে তাই বৃদ্ধা বুন্জনী বেগমকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে ছেলেরা। জীবনের চড়াই-উতরাই পারি দিয়ে ছয় ছেলেকে শিক্ষিত আর প্রতিষ্ঠিত করলেও আজ সেই ছেলেদের ঘরে ঠাঁই হচ্ছে না বুন্জনী বেগমের।


বুন্জনী বেগমের ছয় ছেলে গোপালপুর ইউনিয়নের গড়মাটি ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার মতিউর রহমান, আতিউর রহমান, লুৎফর রহমান, মোশাররফ হোসেন মসুর, রফিকুল ও শফিকুল।


বর্তমানে বুন্জনী বেগম ছেলে লুৎফর রহমানের বাড়িতে ছিল। কিন্তু বউয়ের প্ররোচনায় লুৎফর রহমান মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।


এসময় মাকে উদ্দ্যেশ করে ছেলে বলে, তোমার আরো অন্য ছেলেরা আছে তাদের বাড়িতে গিয়ে থাকতে পারো। আমি আর তোমাকে খেতে দিতে পারব না। এই বলে লুৎফর রহমান একই গ্রামের দফাদার ইয়াসিন আলীর বাড়িতে রেখে আসে মাকে।


পরে দফাদার ইয়াসিন আলী গ্রামপ্রধান বাবুল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় সেই বৃদ্ধা মাকে।


এ ব্যাপারে গ্রামপ্রধান বাবুল ডাক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গ্রামের সকল জনগণ মিলে এই বৃদ্ধ মাকে ছেলের বাড়িতে একমাস করে থাকা খাওয়ার জন্য সময় নির্ধারণ করে দেই।


কিন্তু ছেলেদের কথা অনুযায়ী কাজ ভিন্ন। তারা এই একমাসই মাকে খেতে দিতে চায় না, দেয় বিভিন্ন ধরনের অপবাদ। আমরা এই ছেলেটার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করি। যেন এই বৃদ্ধা মায়ের মত আর অন্য কোন মায়ের এই দিন না দেখতে হয়।


পরে বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ কে জানান।


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বৃদ্ধা বুন্জনী বেগমকে তার বড় ছেলে বাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে এসেছি। আগামী ররিবার তাদের উপজেলা পরিষদের ডেকেছি।