রাজশাহী কারা হাসপাতালে ডাঃ মামুনুরের বিরুদ্ধে বেড বাণিজ্যর অভিযোগ।

লিয়াকত হোসেন রাজশাহীঃ
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতালের ডাক্তার মোঃ মামুনুর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে বেড বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বেড ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা নেন বলে এক তথ্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী কারা হাসপাতালে রুগী না হয়েও থাকা যায় প্রতিমাসে চার হাজার টাকার বিনিময়ে। প্রতি মাসে টাকা দিয়ে বছরের পর বছর থাকা যায় কারা হাসপাতালে ৪টি ওয়ার্ডে।
কারা হাসপাতাল ৫নং ওয়ার্ডে রাজপাড়া থানাধিন চন্ডিপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোঃ রুবেল (৩৭) হাজতী ৬ মাস থেকে, তারি ভাগিনা অন্তর (২৫) হাজতী সেই ১৮ মাস থেকে, একি থানাধীন দাশপুকুর এলাকার মোঃ রমজান (২৮) হাজতী ৭ মাস থেকে, রাজশাহী বাগমারা ভবানীগঞ্জ এলাকার মোঃ রুবেল (৩৩) হাজতি ৪ মাস থেকে রুগী না হয়েও প্রতি মাসে টাকার বিনিময়ে থেকে যাচ্ছেন এ হাসপাতাল ওয়ার্ডে।
কারা হাসপাতালের ৪নং ওয়ার্ডে রাজশাহী বাঘা থানাধীন মোঃ বাবুল (৫৪) হাজতি ৫ মাস থেকে, রাজশাহী বোয়ালিয়া থানাধীন গৌরহাঙ্গা এলাকার মোঃ রাতুল (২৭) হাজতি ৫ মাস থেকে, রাজশাহী গোদাগাড়ী থানাধীন মাদক ব্যাবসায়িক ইসমাইলের ছেলে শীষ মোহাম্মদ (৩৭) হাজতি ৬ মাস থেকে থাকছেন।
আরোও জানা যায়, ডাঃ মামুনুর রহমান কারা হাসপাতালে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের ২৭ তারিখ থেকে কর্মরত রয়েছে। তার বিশ্বস্ত কয়েদী উজ্জ্বল কারা হাসপাতালের চিফ রাইটার। তিনি কারা হাসপাতালে ৫নং ওয়ার্ডে থাকেন এবং তার কাছে কারা হাসপাতালের চাবিসহ সকল সরকারি ওষুধের খাতা- কলমে হিসাব থাকে। তিনিও হাজতীদের বেড ভাড়ার নগদ টাকা উত্তোলন করেন।
এছাড়াও জেলের কারারক্ষী সাব্বির (০১৩১১৯১৯০০৫) এই নাম্বার থেকে বিকাশের মাধমে হাসপাতালের বেড ভাড়ার টাকা উত্তোলন করেন। আবার কেউ নগদ টাকা উজ্জ্বলের কাছে দিলে থাকতে পারে কারা হাসপাতালে বেডে। আর কেউ হাসপাতালের বেড ভাড়া দিতে না পারলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল থেকে নাম কেটে অন্যান্য ওয়ার্ডে রাখা হয় যেমন আমদানী ওয়ার্ড ডিভিশন ওয়ার্ড সিভিল ওয়ার্ড এবং যমুনা পাগলা ওয়ার্ড ১ ও ২ সহ টিন সেটে দেওয়া হয়। আর বিকাশে টাকা দিলে সুস্থ রুগীকে অসুস্হ বলে ভর্তি করা হয় কারা হাসপাতালে।
এছাড়াও কারাগারের ভিতরে ঘুমের ঔষুধ বিক্রি হয়, নগদ ১০০ টাকায় অথবা ১ প্যাকেট গোল্ডলীফ সিগারেটের মাধ্যমে ২টি ঘুমের ট্যাবলেট দেয়া হয়। বিভিন্ন ঔষুধ কিনতে আসামীদের দিতে হয় প্রয়োজন মতো গোল্ডলীফ সিগারেট। এই ঘুমের ঔষুধ বিক্রয় করেন, হাসপাতালের রাইটার উজ্জ্বল, চন্দন, করিম, মাইনুল, সানা উল্লাহ সহ আরো অনেকে।
সরকার বাদী মহিমা মাডারের, সাজাপ্রাপ্ত কয়েদী (৬৭০৯) এই উজ্জ্বল। উজ্জ্বলের প্রত্যেক ওয়ার্ডে নিজস্ব কিছু কয়েদী আছে। নতুন আসামী আসলে তারা আসামীদের কে বুঝিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায় চীফ রাইটার উজ্জ্বলের কাছে, তারা বলেন উজ্জ্বলের কাছে একটি আসামী নিয়ে গেলে আমরা ২০০ টাকা কমিশন পাই এবং হাসপাতালের সকল সুযোগ-সুবিধা পায়।
আরো জানা যায়, উজ্জ্বল কারা হাসপাতালের ৫নং ওয়ার্ডে চিফ রাইটার হিসাবে ১০-১২ বছর ধরে রয়েছে। তার কোনো ডাক্তারি ডিগ্রী নাই কিন্তু সে ডাক্তার হিসাবে নিজের ইচ্ছা মতো ওষুধ দেই হাজতী ও কয়েদিদেরকে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ মামুনুর রহমান (এমবিবিএস) (বিসিএস স্বস্থ্য) সহকারী সিভিল সার্জন বলেন, আপনি অফিসে আসেন আমি আন অফিসিয়ালী বক্তব্য দিইনা। তিনি মুঠো ফোনে সকল কথা অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাঃ এনামুল হক এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কেউ অন্যায় করলে আমি তার পক্ষে নাই।