লক্ষ্মীপুরে ধষর্ণ মামলার আসামি জামিনে বের হওয়ার পর নারী স্বাক্ষীকে মারধর।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:শরিফ হোসেন
লক্ষ্মীপুরে এক প্রতিবন্ধী মধ্যবয়সী নারীকে ধর্ষণ পরবর্তী মামলার ১ নং স্বাক্ষী আকলিমা আক্তার শিল্পীকে প্রকাশ্যে মারধর করে টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শনিবার (২৯ আগস্ট) ধর্ষণ মামলার আসামি আবদুল কাদেরের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের মুকতারামপুর গ্রামে ধর্ষণ মামলায় কারাবরনকারী কাদের প্রকাশ্যে শিল্পীকে মারধর করে। এতে তার গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। একপর্যায়ে প্রায় ২ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার, ৪টি মোবাইল ফোন সেট, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ইন্স্যুরেন্সের কাগজপত্রের ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী শিল্পী প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পালেরহাট শাখার ব্যবস্থাপক ও সদরের দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইন্স্যুরেন্সের কাজ শেষে উপজেলার বিজয়নগর এলাকা থেকে শিল্পী বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় তার সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগে ইন্স্যুরেন্সের প্রায় দুই লাখ টাকা, কাগজপত্র, স্মার্ট ফোনসহ ৪টি মোবাইল ও তার জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল। রবিবার আশুরার বন্ধ থাকায় সোমবার (৩১ আগস্ট) ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পথিমধ্যে মোকতারামপুর এলাকায় এলে সড়কের ওপর প্রতিবন্ধী নারীর ধর্ষণ মামলার আসামি কাদের তার পথ আটকে দাঁড়ায়। এসময় শিল্পীর হাতে থাকা ব্যাগ নিতে অনেক চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তাকে মারধর করে কাদের ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। এসময় তার কান ও হাতে থাকা স্বর্ণালংকারও ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী আকলিমা আক্তার শিল্পী বলেন, আসামি কাদের জামিনে বের হয়ে এসে বিভিন্ন সময় আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। কিন্তু চাঁদা না দেওয়ায় সে আমাকে মারধর করে আমার সঙ্গে থাকা টাকা, মোবাইল ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর শাহ আলম বলেন, কেউ না জানানোয় তিনি কোনো ভূমিকা রাখেন নাই। লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে। প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল রাতে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা মানসিক প্রতিবন্ধী এক নারীকে আবদুল কাদের ঘরে নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে। পর দিনই ওই নারীর ভাই বাদী হয়ে কাদেরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে র্যাব-১১ লক্ষ্মীপুর ক্যাম্প অভিযান চালিয়ে দক্ষিণ হামছাদী থেকে কাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
ঈদুল আজহার চার দিন আগে হাইকোর্ট থেকে কাদের জামিনে বের হয়। কাদের দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতান আহমেদের ছেলে। ওই এলাকায় তার ফ্লেক্সিলোড ও মুনিহারী দোকান রয়েছে। কাদেরের বেপরোয়া জীবনের ক্ষমতার উৎস হিসেবে তার ভাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতা কামাল হোসেনের কথাই এলাকাবাসী জানিয়েছেন।