মুকসুদপুরে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকে আসামি করে পুলিশের মিথ্যা মামলা দায়ের।

 প্রকাশ: ১৯ মে ২০২০, ০২:৩১ অপরাহ্ন   |   মুকসুদপুর


    মুকসুদপুর প্রতিনিধি:
    মুকসুদপুর উপজেলার খান্দারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মাদ সাব্বির খানকে প্রধান আসামি করে মিথ্যা আসামী ছিনতাই মামলা করেছেন পুলিশ। সরেজমিনে গিয়ে শতাধিক এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা গেছে গত ৪ এপ্রিল ও ৬ মে মুকসুদপুর উপজেলার বহুগ্রাম ইউনিয়নের খোদ্দাদুর্বাশুর, দিস্তাইল গ্রামে জমিজমা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরে জাকির কাজী ও আলো খোন্দকারের মধ্যে দু’দফা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষর ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা মুকসুদপুর থানায় মামলা পাল্টা মামলা দায়ের করে। আসামী করা হয় উভয় পক্ষের ৯৮ জনকে।

৯ই মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই মিজানুর রহমান, এস.আই প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ও এ.এস.আই সামসুল হকসহ ১১ জনের একটি পুলিশ দল অভিযান চালিয়ে মামলার এফ.আই.আর.ভুক্ত ও নন-এফ.আই.আর.ভুক্ত ৭ জনকে আটক করে। পুলিশ আসামীদের প্রতি বৈষম্য মুলক আচরন করে এফ.আই.আর.ভুক্ত আসামীদের ছেড়ে দেয়। নন এফ.আই.আরভুক্তদের আটকে রাখে। এসময় এলাকাবাসীর পক্ষে শতশত নারী পুলিশের গাড়ির সামনে দাড়িয়ে নন-এফ.আই.আর.ভুক্তদের ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে পুলিশ তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। অপরদিকে কাউনিয়া গ্রাম থেকে মফিদুল নামক এক আসামী ধরে অদৃশ্য কারনে ছেড়ে দেয়। বাদির মা অপরাধীদের দেখিয়ে দিলে তাকে আবার গ্রেফতার করে পরে ছেড়ে দেয়। তখন নিরুপায় হয়ে পরিরিবারের লোকজন ফোন করে বিষয়টি তাদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের নেতা সাব্বির খানকে অবহিত করেন। এ বিষয়টি নিয়ে সাব্বির খান এস.আই মিজান ও এসআই হায়াত এর সাথে কথা বলে তিনি নন-এফ.আই.আর.ভুক্তদের হয়রানি না করার জন্য অনুরোধ এবং এফ.আই.আর.ভুক্ত আসামীদের না ছাড়ার জন্য বলেন। পুলিশ তাকে আস্বস্ত করেন।

আমাদের প্রতিবেদকের সাথে মোহাম্মাদ সাব্বির খানের কথা হলে তিনি জানান যে, আমি তখন মুকসুদপুর-কাশিয়ানীর উন্নয়নের রুপকার সাবেক সফল বানিজ্য মন্ত্রী লেঃ কর্নেল (অব) মোহাম্মদ ফারুক খান এমপির নির্দেশনায় আমার ইউনিয়নের ঝাকর গ্রামের দুস্ত, গরীব, অসহায় ও দিনমজুরদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করছিলাম। আমি ঝাকর থেকে ফিরে খান্দারপাড়া বোর্ড অফিসে বসি যাতে পুলিশের সাথে দেখা না হয় কিন্তু পুলিশ দিস্তাইলের আসামী ধরে কাউনিয়া যায়, সেখানে ১ জন কে ধরে ছেড়ে দেয়, পরে ভিকটিমের মা বলে যে ওই লোকই তার ছেলেকে মেরেছিল তখন আবার তাকে ধরে কিন্তু অজ্ঞাত কারনে তাকেও শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দেওয়া হয় ইতিমধ্যে আমি ইফতারির উদ্দেশ্যে বাড়ির দিকে রওনা করলে লোকজন ভাটরা মোড়ে আমাকে ঘিরে ধরে এইসব ঘটনা বলতে থাকে, এরিই মধ্যে পুলিশও সেখানে পৌছায়, অনেক লোক দেখে পুলিশ গাড়ি থামিয়ে নন এফ আই আর ভুক্ত ২ জন কে ছেড়ে দেয়, ভুক্তভোগী মহিলারা পুলিশকে ঘিরে ধরে আমি তাদের সরে যেতে বলি কিন্তু অতর্কিতভাবে ৫/৬ জন পুলিশ সদস্য লাঠিচার্জ শুরু করে এবং মহিলাসহ ৭০ জন আহত হয় এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ¯স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে পুলিশকে ঘিরে ফেলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে আমি পুলিশের সামনে দাড়িয়ে তাদের সেইভ করে গাড়িতে তুলে দেই, এটাই প্রকৃত ঘটনা। ব্যাক্তিগতভাবে পুলিশের কাছে জিজ্ঞেস করলে সব জানতে পারবেন। যে পুলিশটি বেশি আহত হয়েছে পুলিশের গাড়ি জোরে টান দিলে উনি পড়ে যায়। জৈনিক পুলিশের এক দারোগা বলেন, এ ঘটনায় সাব্বির খানের কোন দোষ নেই সে যাতে গোলমাল না হয় তার চেষ্টা করেছেন (যাহা অডিও রেকর্ডিংয়ে আছে)। রাজনৈতিক ভাবে তাকে আসামী করেছে এবং এএসআই শামসু দারোগা সর্ম্পুন সুস্থ থাকার পরেও অজ্ঞাত কারনে তাকে ছুটিতে রাখা হয়েছে।

মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মির্জা আবুল কালাম আজাদ জানান যে, পুলিশদল অভিযান চালিয়ে থানায় ফেরার পথে খান্দারপাড়া ইউনিয়নের ভাটরা মোড়ে পৌছালে খান্দারপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও বহুগ্রাম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পুলিশের সাথে কথা বলার সময়, পুলিশের এক সদস্য জনতার উপর লাঠি চার্জ করে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতশত গ্রামবাসী পুলিশের উপরে হামলা চালায়। তখন চেয়ারম্যান তাদের সেভ করে থানায় চলে যেতে সাহায্য করেন। এ সময় চেয়ারম্যান সাব্বির খানও আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশের এসআই হায়াতুর রহমান বাদি হয়ে খান্দারপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মাদ সাব্বির খানকে প্রধান আসামী করে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করে।

মুকসুদপুর এর আরও খবর: